আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস ২০২২ উপলক্ষে সিলেট বিভাগের নদ-নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে আগামি ২২ মার্চ ‘গণশুনানি’ আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১২ মার্চ) বেলা ৩টায় ‘গণশুনানি’ আয়োজনের ঘোষণা উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়াটারকিপার’স বাংলাদেশ, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার, সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার, সারি নদী বাঁচাও আন্দোলন ও বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদ এই ৬ সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে মতবিনিময় সভায় এই গণশুনানি’র তারিখ ঘোষণা দেওয়া হয়।
ওই ৬ সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামি ২২ মার্চ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এই গণশুনানিতে উক্ত ৬ সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় ছাড়াও অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন এবং নদ-নদী দূষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন তাদের বক্তব্য তুলে ধরবেন। গণশুনানি থেকে উঠে আসা মতামত ও সুপারিশসমূহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ সরকারি দপ্তর ও গণমাধ্যমে পাঠানো হবে।
সিলেট নগরের জিন্দাবাজারস্থ ইমজা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়াটারকিপার’স বাংলাদেশের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও সিলেট কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জাতীয় কমিটির সদস্য, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক শাকিলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সুরমা রিভার ওয়াটারকিপারের সংগঠক ও বাপা সিলেটের যুগ্ম সম্পাদক ছামির মাহমুদ, সারি নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবদুল হাই আল হাদী, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপারের প্রতিনিধি জাকির হোসেন সোহেল এবং বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদের আহবায়ক মো. ফজল খান।
মুল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ওয়াটারকিপার’স বাংলাদেশের সমন্বয়ক আবদুল করিম কিম বলেন, সুরমা-কুশিয়ারা বিধৌত শত নদীর সিলেট বিভাগে নদী ধ্বংসের অপকর্ম কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। যার প্রভাবে আমাদের জীবন-জীবিকা, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও প্রাণ-প্রকৃতি বিপন্ন হচ্ছে। দখল, দুষণ ও ভরাটের কারণে সিলেটের অনেক নদী আজ মুমূর্ষু। এই নদীগুলো রক্ষা করা না গেলে সিলেটের অস্তিত্ব সংকট হবে।
মুল প্রবন্ধে ৬ সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, সিলেটের আধিকাংশ নদী প্রতিবেশী দেশ ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্য থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদীর ১৭টি নদী সিলেট বিভাগের। বাংলাদেশমুখি এই নদীগুলোর অধিকাংশে ভারত সরকার বাঁধ ও ব্যারেজ নির্মাণ করেছে। আমাদের নদীগুলোতে প্রয়োজনের সময় পানির অপর্যাপ্ততায় হাহাকার লাগে। আবার অপ্রয়োজনের সময় অতিরিক্ত পানি প্রবাহে দুর্ভোগ বাড়ে।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, সিলেট বিভাগের চার জেলায় প্রায় ১৩৪টি নদীর অস্তিত্ব আমরা খুঁজে পেয়েছি। যদিও শুষ্ক মৌসুমে ১০০টি নদী চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে যায়। তবুও ইউনিয়ন থেকে ইউনিয়নে, উপজেলা থেকে উপজেলায় এই নদীর নাম পাওয়া যায়। চিহ্ন দেখা যায়। ভূমি জরিপের কেতাবে যা নদী হিসাবে লিপিবদ্ধ আছে, বর্ষায় ভূমিতে সেই নদীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। যা আছে তা রক্ষা করতে হবে। বিজ্ঞপ্তি