গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা :
অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি প্রকৃতি কন্যা জাফলংয়ে পর্যটকদের সুবিধার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করা হলো, কিন্তু সেখানে বিশুদ্ধ খাবার পানির কোনো বন্দোবস্ত নেই ভাবুন তো কেমন হতে পারে জীবনটা। আধুনিক জীবনে পানির তীব্র সংকটে পড়লেই বোঝা যায় জীবন কতটা বেদনাদায়ক হতে পারে। সেটি আরও বেশি যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে যখন পানি থাকা সত্ত্বেও তা ব্যবহার করতে না পারলে।
প্রতিদিনই হাজার হাজার পর্যটক প্রকৃতি কন্যা জাফলং এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। কিন্তু পর্যটন এলাকা গুলোতে বিশুদ্ধ খাবার পানির কোন ব্যবস্থা না থাকায় বয়ে বেড়াতে হয় চরম দুর্ভোগ।
সরেজমিন পর্যটন কেন্দ্র জাফলং এর বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় দেখা যায় বড় বড় বাস গাড়ি নিয়ে গ্রুপে গ্রুপে পর্যটক এসেছে জাফলংয়ে, সেখানেই রান্না ও খাবারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে নদী ও কূপের পানি। বছরের পর বছর ধরে এমনটিই চলছে। শত শত ভ্রমণ বিলাসী নদি ও কূপের পানি পান করে পেটের পিরা জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
পর্যটন জাফলং কেন্দ্রে স্ব-পরিবারে কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা সাব্বির রহমান জনি বলেন গোটা দেশে যেখানে উন্নয়নের জোয়ার বইছে, ঠিক তখনই দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ে আগত পর্যটকরা বছরের পর বছর বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে ভুগবে, এটি কেমন কথা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করার দাবি জানাই।
বৃহত্তর জাফলং সংগ্রাম পর্যটন কেন্দ্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ওমর সানি বলেন জাফলং এর বিজিবি ক্যাম্প এলাকার পর্যটন কেন্দ্রটি পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়তই বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়। জাফলংয়ে আগত পর্যটক ও স্থানীয় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট সমস্যা সমাধানে এই এলাকায় গভীর নলকূপ ও ট্যাংক স্থাপনের মাধ্যমে পানির চাহিদা পূরণ করার দাবি জানান তিনি।
ভ্রমণ বিলাসীদের আগমন দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করছে বলে জানিয়ে সিলেট ট্যুরিজম ক্লাবের সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন বলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারবার এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও কার্যত কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। আগত পর্যটকদের খাবার পানির সমস্যা সমাধানে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সু-দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ইউনুছ আলী জানান, পাথরের এলাকা হওয়ায় এখানে কোনো অগভীর বা গভীর নলকূপ স্থাপন করা সম্ভব হয় না, শুধুমাত্র রিংওয়েল স্থাপন করা যায় যা দিয়ে পুরো পর্যটন এলাকা কাভারেজ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা অনেক কঠিন।
এখানে সম্প্রতি কথা হচ্ছে ডাউকি নদী থেকে আসা পানি টাকে ট্রিটমেন্ট করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা। সেক্ষেত্রে জায়গা সংক্রান্ত বিষয় জটিলতা আছে। আলোচনার চলছে ফিজিবল যেইটা হয় সেটা করা হবে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন অবগত আছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ তাহমিলুর রহমান বলেন, পর্যটন কেন্দ্র জাফলং এর বিশুদ্ধ খাবার পানির সমস্যা সমাধানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল’র মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই পর্যটন কেন্দ্র জাফলং এ বিশুদ্ধ খাবার পানির সমস্যা সমাধান হবে বলেও জানান তিনি।