চলতি মাসেই মাধ্যমিকে শুরু হচ্ছে পুরোদমে ক্লাস, প্রস্তুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

16

কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনার ধকল কাটিয়ে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে শিক্ষাখাত। একে একে খুলেছে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠদান কর্মসূচী। সর্বশেষ গত বুধবার ক্লাস শুরু হয়েছে প্রাথমিক এবং কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতেও। বাকি থাকা প্রাক-প্রাথমিকের ক্লাসও শুরু হবে শীঘ্রই। সব মিলিয়ে আবারও পূর্ণোদ্যমে শিক্ষাসূচী চালানোর আশ্বাস দিয়েছে শিক্ষা বিভাগ। বর্তমানে সীমিত আকারে শিক্ষাকার্যক্রম চললেও চলতি মাসের মাঝামাঝিতেই মাধ্যমিক পর্যায়ে পুরোদমে ক্লাস শুরুর কথা জানিয়েছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী। এতে করে শিক্ষা সূচীতে সীমিত কথাটি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘স্টাডি ইন ইন্ডিয়া-এ্যাডুকেশন ফেয়ার ২০২২’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি সাংবাদিকদের বলেন, আশা করছি এই মাসের মাঝামাঝিতেই মাধ্যমিকে পুরোদমে ক্লাস শুরু হবে। এক্ষেত্রে এ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম চলবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, যারা কোন কারণে শ্রেণীকক্ষে আসতে পারছে না, তারা হয়ত এ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রমের আওতায় থাকবে। যেখানে দরকার মনে হবে, সেখানেই এ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। পুরোদমে ক্লাস শুরু হলে ব্লেন্ডেড এ্যাডুকেশনের পাইলটিংয়ে কোন সমস্যা হবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ব্লেন্ডেড এ্যাডুকেশনের জন্য আমরা ন্যাশনাল পলিসি করছি। আগামী ২৬ মার্চ সেই পলিসি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেয়ার কথা রয়েছে। এজন্য খুব জোরেশোরে কাজ চলছে। সেটা হয়ে যাওয়ার পর আমরা ঠিক করব কী করে, কোথায়, কিভাবে করব ? তার জন্য আমাদের অনেক রকমের প্রস্তুতিও নিতে হবে। ব্লেন্ডেড করতে হলে সকল ক্লাসরুমকে সেভাবে সাজাতে হবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ চলছে, আরও দিতে হবে। এটা এই মুহূর্তেই হয়ে যাবে, এমন নয়। আমাদের কাজ চলছে।
পূর্ণ সিলেবাসে মেডিক্যাল এবং বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়া উচিত। এটাই যৌক্তিক। আমি বিএমডিসির প্রধান ও স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিবের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করেছি। তারা আমাকে বিষয়টি ভেবে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। আমি প্রয়োজনে আবারও তাদের সঙ্গে কথা বলব।
এর আগে এ্যাডুকেশন ফেয়ারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, এখন স্বাধীনতার মাস, এই মাসে বিশেষ করে মনে করতে হয় ভারতের বন্ধুপ্রতীম জনগণ ও সরকারকে। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের প্রতি তাদের অসাধারণ ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য, সহযোগিতা ছিল। তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল খাদ্য দিয়ে, আশ্রয় দিয়ে, চিকিৎসা দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে, সবকিছু দিয়ে এবং তাদের সেনারা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি লড়াই করেছেন, রক্ত দিয়েছেন আমাদের যোদ্ধাদের মতন। কাজেই, এই দুই দেশের বন্ধন শুধু ভৌগোলিক বা পাশাপাশি আছি এই বলে নয়, আমাদের বন্ধন আত্মার। কাজেই আমরা একসঙ্গেই চাই আমাদের দুটো দেশ একসঙ্গে এগিয়ে যাক, আর সেক্ষেত্রে শিক্ষা একটা বড় মাধ্যম।
এ সময় ডাঃ দীপু মনি ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টল পরিদর্শন করেন। স্টলগুলোতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্টরা সে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তের শিক্ষার্থীরা যদি বাংলাদেশ পড়তে আসে আর বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা যদি ভারতে পড়তে যায়, তাতে দুই দেশের জ্ঞান বিনিময়ের পাশাপাশি সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।