গণশুনানীর উদ্বোধনকালে বিভাগীয় কমিশনার ॥ ১৫ বছর বয়সেই ভোটার হতে রেজিস্ট্রেশন করে রাখা যাবে

5
জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সংক্রান্ত গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন।

ভোটার হতে ১৫ বছর বয়সেই রেজিস্ট্রেশন করে রাখা যাবে বলে জানিয়ে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, নির্ধারিত ১৮ বছর হলেই তথ্য সেন্ট্রাল ডাটা সার্ভারে ভোটার তালিকায় চলে যাবে। আর নতুন করে ভোটার হতে হবে না। তবে এ ক্ষেত্রে নির্ভুল তথ্য দিতে হবে। আর আগামি দিনে স্মার্ট কার্ডই পাসপোর্টের কাজ দেবে। এক কার্ডে ৫২ ধরণের তথ্য থাকবে।
‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, রক্ষা করব ভোটাধিকার’ এই শ্লোগানে বুধবার (০২মার্চ) জাতীয় ভোটার দিবস-২০২২ উপলক্ষে আঞ্চলিক নির্বাচনী কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষে সিলেটে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সংক্রান্ত গণশোনানীর উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচনী কর্মকর্তা ফয়সল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, সংবিধান ভোটার হওয়ার অধিকার দিয়েছে। যারা অপ্রকৃতস্থ নন কিংবা যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেন না বা ট্রাইব্যুনাল থেকে অপরাধী নয়, কেবল তারাই ভোটার হতে পারবেন। আর ভোটার হলে সকল সেবা নিতে পারবেন। সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। যেমন মুজিব বর্ষের সময় ঘর প্রদান করা হয়েছে ভোটার কার্ড দেখেই।
তিনি বলেন, দরিদ্র থেকে উচ্চ পর্যায়ে সবারই ভোটার কার্ড প্রয়োজন। ভোটার কার্ড না থাকলে বা তথ্যে গড়মিল থাকলে আজই ঠিক করে নিন। নয়তো সবক্ষেত্রে বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে। বিশেষ করে সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুলের কারণে পাসপোর্ট করতে গিয়ে বেশি বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। কেননা জন্ম সনদের সঙ্গে সার্টিফিকেটের মিল নেই, বানান ভুল। এসব সমস্যাগুলো সমাধান করতেই গণশোনানীর আয়োজন করা হয়েছে। আর যাদের বয়স ১৮ বছর হয়ে গেছে, তাদেরকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র কেবল একটা ভোটের জন্য নয়, আইডি কার্ড থাকলে অন্তত ৭০টি সরকারি সুবিধাভোগ করতে পারবেন। আর একজন ভোটারের ভোটাধিকার রাষ্ট্রের মূলভিত্তি। আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বসবাস করি। কাকে দেশের দায়িত্ব দেবো, স্থানীয় থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদানের মাধ্যমে নিজের চিন্তা চেতনার বাস্তবায়ন ঘটাতে। বিশেষ করে নাগরিক সেবা প্রদানে জনপ্রতিনিধি বাঁচাই প্রক্রিয়ায় আপনাকে অংশগ্রহণ করতে হবে। আর ভোট না দেওয়াও সাংবিধানিকভাবে একটি অপরাধ। নাগরিক অধিকার রক্ষা করতেই আপনাকে কেন্দ্রে যেতে হবে।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৭০/৭২ মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ তথা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। এটা আশার কথা। সুতরাং নির্বাচন বিলম্বিত করার কোনো সুযোগ নেই।
তাছাড়া সরকার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সার্চ কমিটি গঠন করেছে। সেখান থেকে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আর নির্বাচন কমিশনে যারা এসেছেন, তারা সবাই যোগ্য লোক। তাঁদের নিজস্ব ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা নিয়ে কোনো ধরণের কোনো প্রশ্ন নেই। সে ক্ষেত্রে আমরা আশা করতে পারি, এই কমিশন আগামিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করে দেবে। আমরা সবাই মিলে চাই নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুন্দর একটি পরিবেশন। এ জন্য বাসায় বসে থাকলে হবে না, আপনাকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতেই হবে। আমরা আশা করছে, এখনো যারা বাকি আছেন, তাদের ভোটার হতে উৎসাহিত করবেন বলেও মন্তব্য করেন বিভাগীয় কমিশনার।
সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার শুক্কুর মাহমুদের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা এমদাদুল হক, সাংবাদিক নাসির উদ্দিন।
এছাড়া আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ এবং সিলেট বিভাগের চার জেলা থেকে আগত সেবাগ্রহিতারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে সিলেটের হাল নাগাদ ভোটার ও সংশোধনীর তথ্যসহ নানা কার্যক্রম উপস্থাপন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি