স্টাফ রিপোর্টার :
গণটিকা কার্যক্রমে সিলেট বিভাগে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। গত শনিবার সিলেট নগরীসহ পুরো বিভাগে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষকে করোনার টিকা দেয়া হয়েছে। ফলে স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকা কেন্দ্রগুলোতে ছিল টিকা গ্রহিতাদের উপচেপড়া ভিড়। অন্যদিকে সারা দেশের মতো সিলেট বিভাগে গণটিকা কার্যক্রমের সময়সীমা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়েছে। রোববার ও সোমবার গণটিকা কার্যক্রম চলবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, সিলেট বিভাগে প্রথম দিন গণটিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল সাড়ে ৪ লাখ ডোজ। কিন্তু সকাল থেকে কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভিড় থাকায় শনিবার প্রায় ৭ লাখ ডোজ টিকা দেয়া সম্ভব হয়েছে। গতকাল শনিবার নগরী ছাড়া পুরো বিভাগে ৬ লাখ ৭৫ হাজার ১শ জন টিকা গ্রহণ করেন। অন্যদিকে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ জাহিদুল ইসলাম জানান, শনিবার সর্বমোট ৬৫ হাজার ৩শ ৪৭জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে জনসন এন্ড জনসন ৪৩ হাজার ৫৫০ জনকে, ফাইজার ১৪ হাজার ৪৪৫ জনকে এবং সিনোভ্যাক ৭ হাজার ৩শ ৫২ জনকে দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, করোনার টিকা দেয়ার শুরু থেকেই সিলেট নগরীর প্রধান কেন্দ্র এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কেন্দ্রে ভিড় লেগেই আছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষকে টিকা দেয়া হয় এই কেন্দ্রে। তবে গতকাল শনিবার গণটিকা দিতে এই হাসপাতালে ভিড় করেছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। টিকা কেন্দ্রের বাইরের চত্বরেও ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে মানুষকে টিকা নিতে হয়েছে। এসময় শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা নিয়েও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সিলেট বিভাগের ১ হাজার ৫শ কেন্দ্রে টিকা প্রদান করা হয়।
এদিকে, সিলেট নগরীর ৯৬টি কেন্দ্রে শনিবার টিকা দেয়া শুরু হয়। তবে সকাল থেকে ওয়ার্ডভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতে তুলনামূলক মানুষের কম ভিড় দেখা গেছে। যারা ওয়ার্ডভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতে টিকা দিয়েছেন তারা অনেকটা স্বস্তিতেই দিয়েছেন। কম ভিড় থাকায় খুব বেশি সময় লাইনে দাঁড়াতে হয়নি। টিকা প্রদানের ব্যবস্থাপনা নিয়েও তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কেন্দ্রে সকাল থেকে ছিল উপচেপড়া ভিড়। হাসপাতালের সামনের নতুন আউটডোর বিল্ডিংয়ের টিকাকেন্দ্র থেকে শুরু করে সামনের চত্বর পর্যন্ত তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকা দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদেরও হিমশিম খেতে হয়েছে। অনেককে লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে অধৈর্য্য হয়ে ফিরে যেতেও দেখা গেছে। অনেকে আবার অভিযোগ তুলেছেন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম করে লাইন ভেঙে অনেককে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। এর আগে শনিবার সকালে পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী গণটিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।