দেশের ষাটোর্ধ সব নাগরিককে পেনশন সুবিধার আওতায় আনতে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহান একুশের আগে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এমন নির্দেশনা জাতির জন্য বড় সুসংবাদ। বর্তমান সরকারের প্রধান বিবেচ্য যে জনকল্যাণ, সেটিই এর মধ্য দিয়ে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠল। বাস্তবতা হলো, দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মাত্র ৫ শতাংশ সরকারী চাকরিতে নিয়োজিত। তারাই পেনশন সুবিধা পান। বাকি ৯৫ শতাংশের মধ্যে প্রায় ৮ শতাংশ গ্রাচ্যুইটি সুবিধা পেলেও অন্যদের জন্য সে সুবিধাও নেই। সচেতন শিক্ষিত সমাজ ভবিষ্যতের কথা ভেবে সঞ্চয় করেন এবং এমন খাতে পুঁজি বিনিয়োগ করেন যাতে সেখান থেকে যে মুনাফা আসে সেটিই তাকে প্রবীণকালে আর্থিক সুরক্ষা দিতে পারে। উন্নত দেশগুলোর বিভিন্ন বীমা, ব্যাংক ও বিনিয়োগ কোম্পানির আর্থিক উপদেষ্টা রয়েছে। তারা আয়-ব্যয়ের ধরন ও ভবিষ্যত সম্ভাবনার বিবেচনায় একজন গ্রাহকের জন্য বিনিয়োগের পরিকল্পনা প্রণয়ন করে থাকে। তখন একজন গ্রাহক ঠিক করতে পারেন তিনি কোন্টা বেছে নেবেন। এর মধ্যে আছে বীমার পেনশন স্কিম, বন্ডে বিনিয়োগ, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ প্রভৃতি। প্রতিটি খাতের জন্যও আবার আলাদা আলাদা সঞ্চয়ের ব্যবস্থা থাকে। যেমন- ভ্রমণ, বাড়ি বা ফ্ল্যাট ক্রয় প্রভৃতি। প্রত্যেক গ্রাহকের জন্য তারা আলাদা আলাদা পরিকল্পনা করে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে এসবের বালাই নেই। অবসরবিষয়ক সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা এখনও আমাদের দেশে অনুপস্থিত।
প্রধানমন্ত্রী ইতোপূর্বে দারিদ্র্য দূরীকরণকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এক্ষেত্রে অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তবে এখনও প্রতি পাঁচজনে একজন দারিদ্র্যের শিকার। এসব নিয়ে সরকার কাজ করছে। পাশাপাশি প্রবীণদের নিয়েও কাজ করছে। প্রবীণদের জন্য আইন ও বিধিমালা হওয়ায় এখন আর কারও পক্ষে মাতাপিতাকে অবহেলা করা সম্ভব নয়।
তাই শেষ জীবনে প্রবীণদের আর্থিক সুরক্ষায় সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের পরিকল্পনা অবশ্যই একটি মহৎ ভাবনা। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবীণবান্ধব পদক্ষেপ হিসেবে সবার জন্য পেনশন সুবিধা প্রাপ্তির কথা ভেবেছেন। দেশবাসীর প্রত্যাশা, বর্তমান জনবান্ধব সরকারের পক্ষেই এটির যথাযথ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শতভাগ আন্তরিক মানবিক ও দায়িত্বশীল হতে হবে।