সিলেটের প্রাণীসম্পদ খাতের উন্নয়নে ব্যাপক পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে – মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী

7

স্টাফ রিপোর্টার :
মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী বলেছেন, সিলেটের প্রাণীসম্পদ খাতের উন্নয়নে ব্যাপক পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সিলেট বাংলাদেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ জনপদ। আর এই সিলেটের উন্নয়নকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। সে গুরুত্বের একটি অংশ হিসেবে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি করা হচ্ছে। এ ইনস্টিটিউট এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে যে প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাণীসম্পদ খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে। তিনি বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে এ জনশক্তির চাহিদা থাকবে। ফলে দেশের মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা মেটানো, বেকারত্ব দূর করা ও উদ্যোক্ত তৈরির জন্য দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি এ ইনস্টিটিউট থেকে তৈরি হবে।
শনিবার ৫ ফেব্রুয়ারি নগরী টিলাগড়ে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (আইএলএসটি), সিলেট এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। এ সময় প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুন্ন রেখে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম ফেরদৌস আলম, যুগ্মসচিব ও মন্ত্রীর একান্ত সচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. অমলেন্দু ঘোষ, আইএলএসটি স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম, প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. শরীফুল হক ও ডা. জসিম উদ্দিন, সিলেট জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রুস্তম আলী এবং সিলেট বিভাগে কর্মরত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এরপর মন্ত্রী দুপুরে সিলেট জেলা দুগ্ধ খামার পরিদর্শন করেন। এ সময় মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সিলেটের প্রাণীসম্পদ খাতকে উন্নত করার জন্য আমরা ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছি। এ উন্নয়ন কিভাবে করা যায় সেজন্য আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করছি। দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য আমরা ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট করছি। এ দক্ষ জনশক্তি নিজেরা স্বাবলম্বী হবে, ফলে তাদের বেকারত্ব দূর হবে। সিলেটকে উন্নত করার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল দপ্তরের কার্যক্রমকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি। এখানে গবাদিপশু উৎপাদন, ব্ল্যাকবেঙ্গল ছাগল উৎপাদন, দুগ্ধ উৎপাদন কীভাবে আরো বাড়ানো যায় সে লক্ষ্যে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। আমরা চাই সিলেটের প্রাণিসম্পদ খাতে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসুক”।
সম্প্রতি গাজীপুর সাফারি পার্কে জেব্রা ও সিংহী মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “বিদেশ থেকে আনা প্রাণীদের থাকার পরিবেশ ও জলবায়ু অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশে একই নয়। এর বাইরে বর্তমানে প্রাণীদের মধ্যে কঠিন রোগ সংক্রমিত হচ্ছে। জেব্রার মৃত্যু একটা রোগের কারণে হয়েছে। একইভাবে চিড়িয়াখানায় প্রাণী মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে আমরা একাধিক ল্যাবে পরীক্ষা করেছি। সেক্ষেত্রে অবহেলার কারণে নয়, রোগ সংক্রমিত হয়ে প্রাণী মারা যাচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তারপরও প্রাণীর মৃত্যতে আমাদের কোন ত্রুটি আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছি। পাশাপাশি অন্য প্রাণীদের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোনরকম অবহেলায় কোন প্রাণীর মৃত্যু হবে না”।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “যাতে বন্যপ্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট না হয়, জলবায়ু নষ্ট না হয় সেজন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কাজ করছে । চমৎকার একটা প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করেই আমরা সৌন্দর্য বৃদ্ধির চেষ্টা করছি”।
পরে মন্ত্রী সিলেট সার্কিট হাউসে সিলেট বিভাগে কর্মরত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন ও বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন।