এবার বাড়ছে বিদ্যুত এবং গ্যাসের দাম। ইতোমধ্যে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে পেট্রোবাংলা এবং গ্যাস কোম্পানিগুলো। গ্যাসের দাম বাড়ার আগেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড। পিডিবি বলছে, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়াতে হবে। কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে গ্রাহকের ওপর চাপানো হবে বর্ধিত দাম। গ্যাসের প্রস্তাবিত মূল্য বৃদ্ধির পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি। এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বলছে, সকল কোম্পানির প্রস্তাব পাওয়ার পর পর্যালোচনা এবং গণশুনানি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অতীতেও এই প্রক্রিয়ায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। গণশুনানিতে মতামত শোনা হয়েছে সাধারণ মানুষের। তবে প্রস্তাবের হেরফের হয়েছে খুব কম।
গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের পক্ষে বক্তব্য হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়েছে। ভর্তুকি কমাতেই এমন সিদ্ধান্ত। পেট্রোবাংলা সিলেট গ্যাস ফিল্ড, শেভরন, তাল্লো এবং আমদানিকৃত এলএনজির মূল্য উল্লেখ করে শিল্পে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৩ টাকা ২৪ পয়সা, ক্যাপটিভে ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা থেকে ৩০ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। একইভাবে বাখরাবাদ কোম্পানি আবাসিক ব্যবহারে একচুলা ৯২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০০ টাকা, দুই চুলা ৯৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২১০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। প্রিপেইড মিটারে প্রতি ঘনমিটারের বর্তমান মূল্য ১২.৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৭.৩৭ টাকা, সিএনজি প্রতি ঘনমিটার ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৬.০৪ টাকা, হোটেল-রেস্টুরেন্টে ২৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৯.৯৭ টাকা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ১৭.০৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৭.০২ টাকা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৩.৮৫ টাকা থেকে ৩০.০৯ টাকা এবং চা শিল্পে ১০.৭০ টাকা বাড়িয়ে ২৩.২৪ টাকা, বিদ্যুত ও সার কারখানায় ৪.৪৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯.৬৬ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যান্য কোম্পানির প্রস্তাবিত মূল্যও প্রায় একই ধরনের।
পিডিবি বলছে, তাদের ঘাটতি রয়েছে বছরে ২৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে গ্যাসের দাম বাড়লে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচও বাড়বে। গ্যাসের দাম ঠিক কত ভাগ বাড়বে, সেটার ওপর নির্ভর করেই শুরু হবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া। মাত্র কিছুদিন আগে জ্বালানি তেলের মূল্য বেড়েছে। এর প্রভাবে মানুষের জীবনযাত্রার সকল খাতে বেড়েছে দৈনন্দিন ব্যয়। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে এবার গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর আতঙ্ক শুরু হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক মহামারীর এমন সময় গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সঠিক হবে না। বাধ্য হয়ে বাড়াতে হলেও তা সাধারণ মানুষের কাছে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে।