শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শিক্ষকরা হচ্ছেন আমাদের মাথার মুকুট। তাদের উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। পূর্বসূরীদের দেখানো পথ ধরেই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ অঞ্চলের মানুষের আশা আকাক্সক্ষার প্রতীক। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশ বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের মেধা মননে বিকশিত হচ্ছে।
তিনি মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সম্মানে ফিলিসিটিশন প্রোগ্রাম ২০২১ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. তুলসী কুমার দাসের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আনোয়ারুল ইসলাম, নর্থইস্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো: ফারুক উদ্দিন, সোনালী ব্যাংক সিলেটের জিএম মো: জামান মোল্লা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস চ্যান্সেলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, আমাদের শিক্ষক মন্ডলীগণ অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বজায় রাখার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বর্তমান সদাশয় সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁর সাহসী পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী আজ প্রশংসিত হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার প্রসারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সহ সকল ক্ষেত্রে সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানান। প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সুশাসন প্রতিষ্ঠায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক তাহমিনা ইসলাম ও সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিবুল আলমের যৌথ সঞ্চালনায় শুরুতে পবিত্র কালামে পাক থেকে তেলাওয়াত করেন পিএসএস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: এমদাদুল হক। গীতা পাঠ করেন সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রিয়াংকা ভট্টাচার্য। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. সৈয়দ আশরাফুর রহমান। স্মৃতিচারণ মূলক বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. মো: মাস্তাবুর রহমান, অধ্যাপক ড.সাজেদুল করিম, অধ্যাপক ড. সৈয়দ শামসুল আলম। সংবর্ধিত শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ভার্চুয়ালে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. রেজা ই করিম খন্দকার, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. ইসমাঈল হোসেন, প্রফেসর ড. হাবীবুল আহসান। আরো বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল বিশ্বাস, প্রফেসর ড. মো: আতী উল্লাহ, প্রফেসর ড. সুশান্ত কুমার দাস, প্রফেসর ড. কামাল আহমদ চৌধুরী। সংবর্ধিত শিক্ষকদের পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন শাবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর এম. হাবিবুর রহমানের পুত্র স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব এনামুল হাবীব, প্রফেসর অরুণ কুমার বসাকের ছোট ভাই শাবিপ্রবির সাবেক কলেজ মহাপরিদর্শক প্রফেসর প্রদীপ কুমার বসাক। সভাপতির বক্তব্যে সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. তুলসী কুমার দাস বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও আমাদের শিক্ষা গুরুদের সম্মান জানাতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি ফিলিসিটিশন প্রোগ্রাম ২০২১ সফলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের ধন্যবাদ জানান।
সমিতির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ২৩ জন শিক্ষককে সম্মাননা ও সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ১৪ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তারা হচ্ছেন অধ্যাপক ড. মিরাজ উদ্দিন মন্ডল, অধ্যাপক ড. খলিলুর রহমান, অধ্যাপক ড. এমাদ উদ্দিন চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মো: জয়নাল আবেদীন, অধ্যাপক নাজমুল আসহাব, অধ্যাপক ড. মো: আব্দুল হাই চৌধুরী, অধ্যাপক রেজা ই করিম খন্দকার, অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক, অধ্যাপক ড. সুশান্ত কুমার দাস, অধ্যাপক ড. এম. হাবীবুল আহসান, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক ড. কামাল আহমেদ চৌধুরী, অধ্যাপক ড. আতী উল্লাহ, অধ্যাপক ড. আব্দুল আউয়াল বিশ্বাস। এছাড়া ৯ জন শিক্ষককে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়। তারা হচ্ছেন শাবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক ড. সদরুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, ইমেরিটারস অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার বসাক, অধ্যাপক ড. মো: ইসমাঈল হোসেন, অধ্যাপক ড. বজলুল মুবিন চৌধুরী, অধ্যাপক ড. গৌরাঙ্গ দেব রায়, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো: হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক ড. এম এ রকিব, অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম মিয়া এবং অধ্যাপক ড. মাকসুদুল বারী। অনুষ্ঠানে শাবিপ্রবির শিকড়, আজ মুক্ত মঞ্চ, মাবোই আবৃত্তি সংসদ, মৃৎ নৃত্য ও কবিতা আবৃত্তি পরিবেশন করেন। শুরুতে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সুচনা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সম্মানে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি