কাজিরবাজার ডেস্ক :
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে বর্তমান সরকারকে হটাতে বিদেশে বসে ছক কষছে অশুভ মহল। বিরাট অঙ্কের টাকার ফান্ড নিয়ে এই মহলটি বিদেশের মাটিতে বসে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে নিয়োগ করেছে লবিস্ট ফার্ম। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন্ন করতে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব ও এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করানোর ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে লবিং করার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রে আইনানুগ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে পাল্টা লবিং করার জন্য ল’ ফার্ম নিয়োগ দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। সরকারের নীতি নির্ধারকমহল সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাতে বর্তমান সরকার বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসতে না পারে, সে জন্য প্রভাবশালী রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রশাসনে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে অশুভ মহল। এই অশুভ মহলে যুক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের ভেতরে কাজ করছেন এমন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে মন্ত্রী-এমপি ছিলেন এমন অন্তত দুই জনের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক যারা বর্তমান ডেমোক্রেটিক সরকারের প্রশাসনে কাজ করছেন। মূলত, তারাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন এবং তাদেরকে সহায়তা করছে লবিস্ট ফার্ম। এ ছাড়াও এই চক্রান্তকারীদের সহায়তা করছে পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ যোগান বন্ধকারী চক্র। ওয়ান ইলেভেনের সময়ে ক্ষমতাসীন ও সুবিধাবাদী যারা আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশত্যাগ করেছে তারাও যুক্ত হয়েছে ওই অশুভ মহলে। এই অশুভ মহলটিকে নিয়ন্ত্রণ করছে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী বিএনপির একজন সাজাপ্রাপ্ত শীর্ষ নেতা। পর্দার অন্তরালে অশুভ মহলের লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে তৎপরতা চালিয়ে সম্প্রতি র্যাব ও সংস্থাটির ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের খড়গটি চালানো হয়েছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে র্যাব ও সংস্থাটির ছয়জন কর্মকর্তার ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে কয়েক দিন আগে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান বেনজীর আহমেদসহ সাত কর্মকর্তার যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় বিরোধীদের ষড়যন্ত্র দেখছে পুলিশ কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশন। লবিস্ট নিয়োগ করে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়ানো হয়েছে বলেও মনে করে তারা। সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ পুলিশ এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এই দাবি করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে প্রভাবিত করে র্যাবের কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাত কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করানো হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন থেকে র্যাবের কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির আগেও কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেলে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাকে নিয়ে প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছে, যার প্রতিবাদ জানিয়েছে সেনাবাহিনী কর্তৃপক্ষ। র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে লবিস্ট নিয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে প্রভাবিত করা হয়েছে বলে পুলিশ এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এর আগে লন্ডনে বসে বিভিন্ন সময়ে অশুভ মহল ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক করেছে একাধিকবার। বাংলাদেশবিরোধী একটি অশুভ চক্র যারা বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাপ্রাপ্ত করতে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে বিব্রত করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক যারা বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারাই আন্তর্জাতিক লবিস্ট গ্রুপের সহায়তায় মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করে বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থাকে গোপন করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাবিত করেছে বলে পুলিশ এ্যাসোসিয়েশনের দাবি।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল জামায়াত বিষয়টিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে আন্তর্জাতিক লবিং-এর জন্য লবিস্ট নিয়োগে চুক্তি করে ২৫ মিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ২০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে দায়িত্বরত একটি বিদেশী ব্যাংকের মাধ্যমে চুক্তির অর্থও পাঠান জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলী। ২০১০ সালের ১০ মে ৬ মাসের জন্য আমেরিকান কনসালটেন্সি ফার্ম কেসিডি এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটের সঙ্গে চুক্তি করেন মীর কাশেম আলী। পরে সিটি ব্যাংক এনএ-এর মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক্স ট্রান্সফার করে চুক্তির অর্থ কেসেডি এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটের হিসাব যার নম্বর সিএমজিআরপি.আইএনসি ৩০৭১৭২৪৮ (সুইফ্ট কোড : সিটি ইউএস ৩৩) পাঠানো হয়। এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা হচ্ছেন মার্কিন সাবেক কংগ্রেসম্যান মার্টি রুশো। তিনি কেসেডি এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। অনুসন্ধানে পাওয়া নথিতে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা হচ্ছে ৭০০/১৩ স্ট্রিট, ১১ ডব্লিউ, সুইট-৪০০ ওয়াশিংটন ডিসি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ ও লবিং করাসহ মীর কাশেম আলীর উদ্দেশ্য সফলের জন্য এই চুক্তি বলে চুক্তিপত্রে উল্লেখ করা হয়। এই চুক্তিতে মীর কাশেম আলী এবং লবিস্ট ফার্মের পক্ষে জেনারেল কাউন্সেল জে ক্যামের্বজ স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানিটি ২০১০ সালের ৫ অক্টোবর থেকে গত ৫ এপ্রিল ২০১১ সাল পর্যন্ত এই ৬ মাস মীর কাশেম আলীর উদ্দেশ্য সফল করতে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ে লবিং করবে। প্রয়োজনে ৬ মাসের জন্য চুক্তির মেয়াদ আরও ২৫ মিলিয়ন ডলার দিয়ে বাড়ানো যাবে বলে চুক্তিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। মীর কাশেম আলীকে লেখা একটি চিঠিতে কেসেটি এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটসের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট (আন্তর্জাতিক অপারেশন) এস জে পৃস্টেন উল্লেখ করেন, তার স্বার্থ রক্ষার জন্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের লবিং চালাতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। স্বাধীনতার পক্ষের আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে। জামাতের শীর্ষস্থানীয়দের গ্রেফতার করা হয়। জামায়াত বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্নভাবে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া বানচাল করতে উঠেপড়ে লেগে ব্যর্থ হয় এবং যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগে জামায়াত ও বিএনপির নেতার সর্বোচ্চ আদালতে ফাঁসির রায়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরাতে বাংলাদেশ নিয়ে যে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের নামে সম্প্রচারিত হয়েছে তার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনে উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার বিষয় তুলে ধরা হয়। সরকারীভাবে এ প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ করা হয়েছে। সেনাবাহিনীকে নিয়ে আলজাজিরার প্রতিবেদন মিথ্যা বলে অভিহিত করে প্রতিবাদ জানিয়েছে সেনাবাহিনী কর্তৃপক্ষও। প্রতিবাদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ও সেনাবাহিনীকে ‘হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে’ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ‘মিথ্যা তথ্য’ প্রকাশ করা হয়েছে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন আল জাজিরায়।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বেশ কয়েকজন আছেন, যারা প্রশাসনকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে। এর মধ্যে বিএনপির মন্ত্রী ছিলেন, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে এখন পলাতক, তার এক ভাইপো আছেন যিনি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পক্ষে আফ্রিকান মহাদেশের একটি রাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এ ছাড়াও বিএনপির আরেকজন মন্ত্রী ছিলেন যার বাড়ি নরসিংদী জেলায় তার এক ভাইজি আছেন, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়াও কাতারভিত্তিক টেলিভিশন আলজাজিরায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালানো ব্যক্তিরাও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে তৎপরতা চালাচ্ছে। পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ যোগান বন্ধে একজন নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। তার সঙ্গে আবার যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টের এক স্ত্রী যিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনে বেশ ক্ষমতাধর, তাকেও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হচ্ছে। এ ছাড়াও একজন সাজাপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি, যিনি বর্তমানে আমেরিকা ও কানাডায় অবস্থান করছেন, তার গতিবিধিও সন্দেহজনক বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিশ্বের নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার বিষয়টি নতুন কিছু নয়। মানবাধিকার ও গণতন্ত্রসহ অনেক ইস্যুতেই নানা সূচকে দেশটি অনেক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং দেশকে নিষেধাজ্ঞায় ফেলে। আবার ক্ষেত্রবিশেষে সেটি তুলে নেয়। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইস্যু, নির্বাচন এবং রাজনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময়ে কথা বলেছে এবং সমালোচনাও করেছে। সম্প্রতি দেশের নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে তাদের পর্যবেক্ষণের কথাও বলেছে। আবার বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রশংসাও করে আসছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের ভূয়সী প্রশংসাও করেছে দেশটি। সম্প্রতি করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে, চীনের দিকে বেশি ঝুঁকে যাওয়ার কারণেই কি যুক্তরাষ্ট্র এই বার্তা দিল কিনা? সে ক্ষেত্রে সদ্য যুক্তরাষ্ট্রের শেষ হওয়া দুদিনের গণতন্ত্র সম্মেলনে চীন ও রাশিয়ার মতো বাংলাদেশের আমন্ত্রণ না পাওয়ার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে ফাটল ধরাতে ‘তৃতীয়পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে’ দাবি করার অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ কারণেই কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ঘটনা কাজ করেছে, নাকি অশুভ মহলের পেছনে কলকাঠি নেড়েছে ? এ সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে মনে করে গোয়েন্দা সংস্থা।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন তৈরির সঙ্গে জড়িত এক কর্মকর্তা বলেছেন, র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরাসরি নিষেধাজ্ঞার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশে মানবাধিকারের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে যাদের মাধ্যমে তারা তথ্য নেয়, সেই তথ্য প্রদানকারীরাই হচ্ছে পর্দার অন্তরালের অশুভ মহল। এই অশুভ মহলের ইচ্ছা অনুযায়ী দেশটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে আবার তাদের কিছু রাজনৈতিক মোটিভ থাকে। সেই অনুযায়ী তারা কাউকে চাপে বা প্রভাব তৈরির চেষ্টা করে। তবে কেন যুক্তরাষ্ট্র এ রকম আচরণ করছে ? অশুভ মহল থেকে লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং বর্তমান সরকারকে হঠাতে প্রভাবিত করে যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে দিয়ে আরও অনেক অঘটন ঘটানোর ছক কষা হচ্ছে- এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তার দাবি। বিদেশে বসে বাংলাদেশবিরোধী এই ধরনের অপতৎপরতায় কারা লাভবান (বেনিফিসিয়ারি) হচ্ছে বা হবে তার হিসাব-নিকাশও করে দেখা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন গত ডিসেম্বরে বলেছেন, র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটীলিয়ন-র্যাব ও এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকার সেখানে ল’ ফার্ম নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে ভাবছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আমাদের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস খোঁজখবর নিচ্ছে। একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের হয়তো কোন ল’ ফার্ম নিয়োগ করার বিষয় থাকতে পারে।