স্পোর্টস ডেস্ক :
বাংলাদেশই কী তার প্রিয় প্রতিপক্ষ? নাকি ক্যারিয়ারে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষেই খেলেছেন বেশি। সে যাই হোক, নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার ডেভন কনওয়ে বাংলাদেশকে পেলেই ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন- এটা নতুন কথা নয়।
এবারও বাংলাদেশকে পেয়ে জ্বলে উঠলেন তিনি। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালে শুরু হওয়া প্রথম টেস্টের প্রথম দিনই অসাধারণ এক সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন ১২২ রানে। বল খেলেছেন ২২৭টি।
এর আগে মাত্র তিনটি টেস্ট ম্যাচ খেলা হলেও ঘরের মাঠে এই প্রথম টেস্ট অভিষেক হলো কনওয়ের এবং ঘরের মাঠে অভিষেকেই সেঞ্চুরি করে বসলেন তিনি। এর আগে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচেও সেঞ্চুরি করেছিলেন। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়েতে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টেই সেঞ্চুরি ইনিংস খেলা ষষ্ঠ ব্যাটার হলেন কনওয়ে।
২০২১ সালেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল তার ইংল্যান্ডের বিখ্যাত লর্ডসে। ওই ম্যাচে খেলেছিলেন ২০০ রানের অনবদ্য এক ইনিংস। বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ ১২২ রান করার পর তার টেস্ট ক্যারিয়ারে যোগ হলো দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
২০২১ সালের মার্চ-এপ্রিলে যখন বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ড সফরে যায় এবং সেখানে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে, তখনই বলা যায় এই ডেভন কনওয়েকে চিনলো ক্রিকেট বিশ্ব।
তার ক্যারিয়ারে এখনও পর্যন্ত খেলা ৩টি ওয়ানডে’র সবগুলোই বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি খেলা হয়েছে বেশি। এর মধ্যে গত বছর তিন ম্যাচের এক সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছেন তিনি। তাতে তার ব্যাট থেকে যেন রানের ফোয়ারা বইছে।
টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই করেছিলেন অপরাজিত ৯২ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে ১৫ রান করার পর তৃতীয় ম্যাচে ব্যাটই করতে হয়নি তার। ওয়ানডে সিরিজেও একটি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচে ২৭ রান করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ৭২ রান এবং শেষ ম্যাচে এসে করেছিলেন ১২৬ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ২৭১ রান করার পরও এই ডেভন কনওয়ের ৭২ এবং টম ল্যাথামের ১০০ রানের কারণে বাংলাদেশের ম্যাচ জয় সম্ভব হয়নি।
টেস্ট ক্রিকেটে এ নিয়ে চতুর্থ ম্যাচ খেলছেন কনওয়ে। প্রতি ম্যাচেই একটি ইনিংস আছে তার অন্তত ৫০ প্লাস। দুটি সেঞ্চুরি। এর মধ্যে একটি আবার ডাবল সেঞ্চুরিও।
বে ওভালে ১২২ রানের ইনিংস খেলার পর এটাকেই ক্যারিয়ারের এখনও পর্যন্ত স্পেশাল হিসেবে বর্ণনা করলেন কনওয়ে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে লর্ডসে ২০০ রান করার পরও বাংলাদেশের বিপক্ষে ১২২ রানের ইনিংসটাই কনওয়ের কাছে স্পেশাল। কারণ, ঘরের মাঠে প্রথম টেস্টেই এলো তার এই সেঞ্চুরিটি।
কনওয়ে বলেন, ‘এটা খুবই বিশেষ একটা অনুভূতি যে, আমি নিজের মাটিতে প্রথম খেলতে নেমেই একটি সেঞ্চুরি করেছি। ঘরের মাঠে টেস্ট খেলতে নামাটাই আমার জন্য অসাধারণ অনুভূতির। আর ব্যক্তিগতভাবে আমি বলবো, রস টেলরের মত একজন ক্রিকেটারের পাশে থেকে খেলতে পারাটা আমার জন্য আরও অনেক বেশি আনন্দের। এই সেঞ্চুরিটি করার সময় আমি তাকে পাশে পেয়েছি। তিনি খুবই ইতিবাচক একজন ক্রিকেটার। কী করতে হবে, কী করতে হবে না- সবই তিনি আমাকে বলে দিয়েছেন। আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আমার স্মৃতিতে এটা অনেকদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।’
দলের জন্য অবদান রাখতে ভালোই লাগে কনওয়ের। তিনি বলেন, ‘আজকের দিনটা অবশ্যই আমার জন্য ভালো। এই ইনিংসটা যেভাবে খেলতে পেরেছি, তার জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে খুশি। দলের জন্য অবদান রাখতে পারাটা খুবই দারুণ একটি ব্যাপার। আশা করি আগামীকালটাও আমরা কাজে লাগাতে পারবো।’
১২২ রান করে আউট হওয়ার পরও আক্ষেপ কনওয়ের। তিনি বলেন, ‘আরও কিছুটা সময় উইকেটে থাকতে পারতে না পারাটা আমার জন্য হতাশাজনক। প্রস্তুতি ম্যাচে মাঝের সময়গুলোতে আরও বেশি সময় কাটাতে পারলে আরও ভালো হতো। যে কারণে আমাকে নেটে অনেক বেশি সময় দিতে হয়েছে।’
দ্বিতীয় দিন উইকেট আরও ব্যাটিং বান্ধব হবে বলে মন্তব্য করেন কনওয়ে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় উইকেট ব্যাট করার জন্য আরও দুর্দান্ত হয়ে উঠবে। সূর্য আরও তীব্র আকার নেবে। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উইকেট ভাঙতে থাকবে। দল হিসেবে যা আমাদের জন্য আরও কাজে দেবে। আশা করি রাচিন রাবিন্দ্রা নিজেকে আরও মেলে ধরতে পারবে।’