স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে টিকা

4

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বল্পতম সময়ের ভেতর বিজ্ঞানীরা টিকা উদ্ভাবন করেছেন। বিশে^র সব দেশেই নাগরিকদের টিকা প্রদান করার প্রক্রিয়াটি চলমান। আমাদের সৌভাগ্য যে, জনকল্যাণকামী বর্তমান সরকার শুরু থেকেই করোনার টিকা আমদানি এবং দেশে উৎপাদনের ব্যাপারে সক্রিয় রয়েছে। বিশ্বের বহু দেশের মানুষ যখন টিকা নিতে সমর্থ হয়নি, সেই তখনই বাংলাদেশে বিনামূল্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। এমনকি বস্তিবাসীদেরও টিকা দেয়া হচ্ছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা প্রদানের বেলায় কোন ধরনের বৈষম্য ও অনিয়ম করা হচ্ছে না দেশে। পরিতাপের বিষয় হলো, বহু মানুষ টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেও টিকা নিতে কেন্দ্রে আসেনি। প্রায় পৌনে এক কোটি মানুষ টিকা গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ফরমে নিবন্ধন করেও শেষ পর্যন্ত টিকা নিতে টিকাদান কেন্দ্রে উপস্থিত হননি। বিষয়টি উদ্বেগজনক।
এতে তারা যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকবে সেটি বলাই বাহুল্য। করোনাভাইরাস এমন একটি ভাইরাস যেটি প্রতিনিয়ত রূপবদল করে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। সর্বশেষ ওমিক্রন ধরনটি বিশ^ব্যাপী চোখ রাঙাচ্ছে। এই ধরনটির সংক্রমণ ক্ষমতা কয়েকগুণ বেশি। ফলে একজনের করোনা হলে বহুজনই করোনাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবে। তাই পৌনে এক কোটি মানুষ টিকা নিতে অপারগ হওয়ায় দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষই যে করোনাঝুঁকিতে থকেবে, তা নিয়ে দ্বিমত প্রকাশের অবকাশ নেই।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির কারণেই রোগ প্রতিষেধক তৈরি হওয়ায় মানুষ জীবন রক্ষা করতে পেরেছে। চলমান মহামারীকালে এর মূল কারণ রূপবদলকারী শক্তিশালী ভাইরাসটির দমনে আবিষ্কৃত টিকার সহজপ্রাপ্যতা সত্ত্বেও সেটি গ্রহণ না করা এক অর্থে নির্বুদ্ধিতা। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, ‘এতদিন মাস্ক না পরলে সরকারী কোন সংস্থায় সেবা মিলত না। তবে এখন সেবা নিতে করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণও বাধ্যতামূলক হচ্ছে। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন প্রতিরোধে এখন আমরা ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ এর পরিবর্তে বলছি, ‘নো ভ্যাকসিন, নো সার্ভিস’। টিকা আমাদের বড় হাতিয়ার। স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলায় করোনার টিকা গ্রহণ যে জরুরী- এ বিষয়টি মানুষকে বোঝানোর কোন বিকল্প নেই। সেজন্য দ্রুত বিশেষ প্রচার কর্মকান্ড শুরু করা চাই। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও সর্বশেষ দায়িত্ব রয়েছে।