বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ২৬ উপলক্ষে বর্তমানে অবস্থান করছেন স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে। আন্তর্জাতিক এই ফোরামে সভাপতির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সাইডলাইনে তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করছেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে। যাদের মধ্যে আছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স চার্লস, বিশিষ্ট মার্কিন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী বিল গেটস, মেলিন্ডা গেটস প্রমুখ। এসব বৈঠকে প্রধানত জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত আলোচনা প্রাধান্য পেলেও উন্নয়ন ও বিনিয়োগ প্রসঙ্গও উঠে আসে অনিবার্যভাবে। এর আগেও প্রধানমন্ত্রী যেসব দেশে সফরে গিয়েছেন যেমন-জার্মানি, জাপান, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র- সেসব দেশেও তিনি দেশী-বিদেশী ব্যবসায়ী, শিল্পগোষ্ঠী এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদাত্ত ও আন্তরিক আহ্বান জানিয়েছেন। গ্লাসগোতেও রাতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রদত্ত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। প্রত্যুত্তরে প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করার আশ্বাস দিয়ে বলেন, লন্ডনে শীঘ্রই বিনিয়োগ সম্পর্কিত একটি রোড শোর আয়োজন করবে বাংলাদেশ। দেশে নতুন ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রস্তুতির পথে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশী-বিদেশী নিয়োগকারীদের জন্য কর অবকাশ, স্বল্পসুদে ব্যাংক ঋণ, বিদ্যুত, পানি, গ্যাস যোগাযোগ অবকাঠামোসহ পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে আরও কিছু করা যেতে পারে। এ বিষয়ে বিনিয়োগ বোর্ড বিডাকে তিনি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেবেন। তবে বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই দেশে প্রচলিত রীতিনীতি ও আইন মেনে বিনিয়োগ করতে হবে। বিনিয়োগ বন্ড ও প্রিমিয়াম বন্ডেও বিনিয়োগ করতে পারবেন প্রবাসীরা। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি শহরে বাংলাদেশ আয়োজিত রোড শোতে বিপুল সাড়া পাওয়া গেছে বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে।
একদিকে ভারত-নেপাল-ভুটান, অন্যদিকে মিয়ানমার-চীন পর্যন্ত সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপিত হলে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির চেহারা বদলে যেতে বাধ্য। ফলে বাংলাদেশ হবে এর কেন্দ্রবিন্দু। পাশাপাশি চট্টগ্রামের মাতারবাড়িতে চলমান গভীর সমুদ্রবন্দর, পায়রাবন্দর, মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল, মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরী, রামপাল ও বাঁশখালীতে দুটি বৃহৎ কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রসহ অন্তত ১০টি মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান। সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই হতে পারে বিনিয়োগের জন্য সর্বোত্তম।