বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
বিদ্যালয়ের কাজ না করে বরাদ্দের টাকা মেরে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তাহিরপুরে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষকের নাম দিলীপ কুমার গাঙ্গুলী নান্টু। তিনি উপজেলা সদর উজান তাহিরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।এর আগেও একই অভিযোগে তাকে শাহগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বদলি করা হয়।
জানা যায়, উপজেলা সদর উজান তাহিরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৭ সাল থেকে ২০২০-২১ অর্থ বছরে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার স্লিপ বরাদ্দ দেয়া হয। ২০১৮-১৯ থেকে ২০২০-২১ অর্থ বছরে রুটিন মেনটেইন্স বাবদ ৮০ হাজার টাকা এবং ২০-২১ অর্থ বছরে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বছরে বছরে বরাদ্দের টাকা দিয়ে নাম মাত্র কাজ করে টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান। সম্প্রতি বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিস পর্যন্ত জানাজানি হলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সহ ৪ কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্তে গেলে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকার কোন হিসেব দিতে পারেন নি প্রধান শিক্ষক।
সূত্র জানায়, একই রকম ভাবে বিদ্যালয়ে টাকা আত্মসাতের কারণে ২০১৮ সালে তাকে শাহগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয থেকে পানিসমেন্ট বদলি করা হয় উপজেলা শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের গোলক পুর গ্রামে।
কিন্ত প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার নান্টু রাতারাতি তৎ সময় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সহ স্থানীয় লোকজনকে ম্যানেজ করে উপজেলা সদর উজান তাহিরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি নেন এবং ২০১৮ সালে জানুযারী মাসের শেষ দিকে বিদ্যালয়ে যোগ দান করেন। যোগদানের কিছুদিন তিনি ভালো ভাবে বিদ্যালয় দেখা শুনা করেন। কিছু দিন যেতে না যেতেই আবারো তিনি ফিরে যান তার পুরনো অভ্যাসে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয় মেরামত সহ আনুষাঙ্গকি কাজ করার জন্য যথ সামন্য টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কাজ না করে শুধু কিভাবে টাকা মেরে দেয়া যায় সেই পাঁয়তারাই করেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, কিছু দিন হলো আমি বিদ্যালয়ের সভাপতি মনোনিত হয়েছি। আমার সময়ে কোন টাকা পয়সার হিসেবে গড়মিল নেই। যা গড়মিল পাওয়া গেছে তা পুরনো বছরগুলোর।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও ছাত্র অভিভাবক হাফিজ উদ্দিন
বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এর আগেও শাহগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে একই অভিযোগে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও অত্র বিদ্যালয় ক্লাসটার অফিসার আবু সাঈদ বলেন টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সত্য। প্রথমিক তদন্তে তা প্রমাণিত হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত দিলীপ কুমার গাঙ্গুলী নান্টু বলেন, বরাদ্দের টাকা দিয়ে আমি কাজ করেছি। কাজের বিল উত্তোলন করতে গিয়ে অফিসেও কিছু টাকা খরচ হয়েছে।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল খায়ের এর সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলেও তা করা যায় নি। তবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। জেনে আমি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবো।