স্টাফ রিপোর্টার :
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সব প্রস্তুতি শেষ। গতকাল রবিবার দুর্গতিনাশিনী দশভুজা দেবীর সায়ংকালে বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস ছিলো। আজ সোমবার ১১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। ঢাকের বোল, কাঁসর ঘণ্টা, শাঁখের ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠবে সিলেটের পূজামন্ডপগুলো। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে পূজার জৌলুস থাকবে কিছুটা কম।
হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশ্বাস অনুযায়ী, এবার “দেবীর ঘোটকে আগমন। ফল্ম-ছত্রভঙ্গম্ভরঙ্গমে ॥ দেবীর দোলায় গমন। ফলম-দোলায়াং মড়কং ভবেৎ।” প্রতি শরতে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বর্গলোক কৈলাস ছেড়ে মর্তে আসেন দেবী দুর্গা। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে নির্দিষ্ট তিথি পর্যন্ত বাবার বাড়িতে কাটিয়ে আবার ফিরে যান দেবালয়ে। দেবীর অবস্থানকালে ৫দিন পৃথিবীতে ভক্তরা দেবী মায়ের বন্দনা করেন। এই বন্দনাকে কেন্দ্র করে দেশবাসী মেতে ওঠে উৎসব আনন্দে।
পুরোহিত মতে, আজ সোমবার সূর্যোদয় ঘ ৬/৪/৩৬, সুর্যাস্ত ঘ ৫/৪২/৩৩। পূর্ব্বাহৃ ঘ ৯/৫৭/১৬। পঞ্চমী তিথি প্রাতঃ ঘ ৬/৫৩/২৪ পরে ষষ্ঠী তিথি শেষরাত্রি ঘ ৪/৩৩/২৯ পর্যন্ত। প্রাতঃ ঘ ৬/৫৩/২৪ গতে শ্রীশ্রীদুর্গা ষষ্ঠী। প্রাতঃ ঘ ৬/৫৩/২৪ গতে পূর্ব্বাহৃ মধ্যে (কিন্তু কালবেলানুরোধে ঘ ৭/৩১/৫১ মধ্যে পূনঃ ঘ ৮/৫৯/৫ গতে পূর্ব্বাহৃ মধ্যে) শ্রীশ্রীশারদীয়া দুর্গাদেবীর ষষ্ঠ্যাতি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠী বিহিত পুজা প্রশস্তা (অত্রকৃত্যে কালবেলানুরোধে নিরবকাশে ন বহু সম্মত) সায়ংকালে বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস।
চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পূজামন্ডপগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ, আনসার, র্যাবসহ সাদা পোশাকের পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী কাজ করবে।
করোনার কারণে গতবছর আনন্দময়ীর আগমন ঘিরে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে আনন্দের অনেকটা ভাটা পড়েছে। এবারের দুর্গাপূজার মন্ডপের সংখ্যা সিলেট জেলা ও মহানগর মিলে ৬৭০টি। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৬০৫টি মন্ডপে ও মহানগরীর ৬৫টি মন্ডপে পূজা উদযাপন হবে। এর মধ্যে মহানগরে সার্বজনীন ৫০টি এবং ১৫টি পারিবারিক মন্ডপ রয়েছে।
পঞ্জিকা মতে, মহালয়া, বোধন ও সন্ধিপূজা-এই তিন পর্ব মিলে দুর্গোৎসব। দেবীপক্ষের শুরু হয় যে অমাবস্যায়, সেদিন হয় মহালয়া। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, সেদিন ‘কন্যারূপে’ মর্তে আসেন দেবী দুর্গা। মহালয়ার মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। গতকাল রবিবার পঞ্চমী তিথিতে দেবীর বোধন হয়। আজ সোমবার মহাষষ্ঠী তিথিতে ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে শুরু হবে শারদীয় দুর্গোৎসবের মূল অনুষ্ঠান। আগামী শুক্রবার ১৫ অক্টোবর মহাদশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হবে ৫দিন ব্যাপী এ দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।