১৯ জুন শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। চলতি বছর ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে, যা গতবারের তুলনায় ২ লাখ ২১ হাজার ৩৮৬ জন কম। তাদের মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ৯ হাজার ৫১১ জন এবং ছাত্রী ১০ লাখ ১২ হাজার ৩৫৭ জন। মোট ২৯ হাজার ৫৯১টি প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়। এ বছর ৩ হাজার ৭৯০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিদেশের ৮টি কেন্দ্রে অংশ নেবে ৩৬৭ জন পরীক্ষার্থী। সূচী অনুযায়ী পরীক্ষা শেষ হবে ৬ জুলাই। ২০২২ সালের সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে এবারের পরীক্ষাও। পরীক্ষার সময় ৩ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ২ ঘণ্টা করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে ২৫ জুন অনুষ্ঠেয় এসএসসি পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হবে ২৪ জুন। পরীক্ষার শেষে ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের কথা রয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবারে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে গতবারের তুলনায়। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, প্রতিবছর মান উন্নয়নের জন্য অনেকে পরীক্ষা দেয়। কিন্তু গতবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেয়া হয়েছে শুধু আবশ্যিক বিষয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। সে কারণে পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী নেই বললেই চলে। গত বছর যদি পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা হতো তাহলে যারা অকৃতকার্য হতো তারাও অংশ নিত এবারের পরীক্ষায়। সেটা না হওয়ার কারণে এবার কম মনে হচ্ছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। আসলে নিয়মিত পরীক্ষার্থী কমেনি।
তবে একথাও সত্যি যে, গত দুই বছর ধরে চলমান কোভিড-১৯ অতিমারী সবচেয়ে বেশি আঘাত ও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে। এসময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়ই বন্ধ থেকেছে বলা চলে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার নিমিত্ত। স্বভাবতই অনেক শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক লেখাপড়া ব্যাহত ও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। জীবন-জীবিকার সংগ্রামে অনেক শিক্ষার্থী জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছে কৃষিকাজসহ বিভিন্ন পেশায়। বাল্যবিয়ের হার বৃদ্ধির খবরও আছে। এসবও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে অবশ্যই। ইতোমধ্যেই কাগজ-কলম-পেন্সিল-বইসহ শিক্ষা উপকরণের দামও বেড়েছে। ব্যয় বেড়েছে কোচিং সেন্টারগুলোতে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এক ধরনের ভীতিও রয়েছে। এটাও বাস্তবতা যে, সার্বিকভাবে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা ও পাঠদান কার্যক্রমে পুরোপুরি গতি আসেনি এখনও। আশার কথা এই যে, শিক্ষার্থীদের করোনার ভ্যাকসিন প্রদানের মাধ্যমে সুরক্ষা কার্যক্রম চলমান। এসএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে ১৫ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত সবধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। এগুলো থাকবে নজরদারির আওতায়। এরপরও কেউ গোপনে কোচিং সেন্টার খোলা রাখলে তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে কঠোর আইনী ব্যবস্থা। প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়েও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে এই কুচক্রের প্রতি। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে সার্বিক নিরাপত্তা বিধানসহ কিছু পরীক্ষার্থীর অসদুপায় অবলম্বনের দিকে তীক্ষè নজর রাখাও বাঞ্ছনীয়।