ভোটার তালিকা হালনাগাদে অর্থ সংকটে ইসি

3

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দুই বছর থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ বন্ধ। তাই আগামী বছর হালনাগাদের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
তবে এ কার্যক্রম হাতে নেওয়ার জন্য অর্থের যোগান নিয়ে সংকটে পড়েছে সংস্থাটি।
দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সনাতনভাবে অর্থাৎ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা একটি বিরাট কর্মযজ্ঞ। এতে প্রচুর লোকবলের পাশপাশি ব্যয়ও প্রচুর হয়। বর্তমানে এজন্য কোনো থোক বরাদ্দ নেই। তাই কোথা থেকে অর্থের সংকুলান করা যায়, সেটাই ভাবা হচ্ছে। এজন্য প্রথমেই বড় আকারে কাজ শুরু না করে পাইলটিং করতে চাচ্ছে সংস্থাটি।
গত ২১ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিচয় (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিষয়টি নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ সংক্রান্ত কমিটি’ থেকে অনুমোদন আসতে হবে।
ওই বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় কয়েকটি প্রস্তাব আসে। এগুলোর মধ্যে প্রথমটি হলো- ১ জানুয়ারি ২০০৬ বা তার আগে জন্মগ্রহণকারী সব নাগরিকদের (ঝরে পড়া শিক্ষার্থী ও বিগত হালনাগাদে বাদ পড়া সব ভোটার) প্রথাগতভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে নিবন্ধন (ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ নেওয়া) সংগ্রহ করা।
দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গা ভোটার রোধে এবং মৃত ব্যক্তিদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ করার বিকল্প নেই।
তৃতীয়ত, দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠান, বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মেয়াদত্তীর্ণ ও স্থগিতকৃত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এবং প্রকল্পের অধীন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমে যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও জনবল নিয়োগ সম্পন্ন না হওয়া ইত্যাদি কারণে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারিতে তথ্য সংগ্রহের সময়সূচি নির্ধারণ করা যেতে পারে।
ওই সুরপারিশগুলো আলোচনা করে ২১ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে ১ জানুয়ারি ২০০৬ বা তার আগে জন্মগ্রহণকারী নাগরিক নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত হয়। এক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি না গিয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধনের জন্য এবং ঝরে পড়া শিক্ষার্থী ও বাদ পড়া ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ ও মৃত ভোটারদের নাম ভোটার তালিকা থেকে কর্তনের জন্য প্রচলিত পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজার নিয়োগ দিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধনের জন্য শহর এলাকা, প্রত্যন্ত এলাকা এবং বিশেষ এলাকার তিনটি উপজেলায় পাইলট কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
পাইলট কর্মসূচিতে পাওয়া ফলাফল সন্তোষজনক হলে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে প্রচলিত পদ্ধতিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধন এবং মৃত ব্যক্তিদের ভোটারদের তালিকা থেকে কর্তনের পাশাপাশি মাধ্যমিক/উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্কুল/কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধনের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।
এ বিষয়ে এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেন, দুই বছর পর হালানাগাদের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এজন্য আমাদের অর্থ কোথা থেকে আসবে সেই চিন্তা করতে হচ্ছে। কাজেই শুরুতেই আমরা বড় আকারে কাজ শুরু না করে পাইলটিং করবো। এতে ভালো ফলাফল এলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে। এক্ষেত্রে ১৬ বছরের ঊর্ধ্বের নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তবে কবে থেকে এবং কোথায় পাইলটিং করা হবে সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।