মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুর পৌর সদরে নলজুর নদীর উপর থাকা দুটি পুরনো সেতু এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কালের পরিক্রমায় সেতুগুলো সরু হয়ে যাওয়ায় যানজট লেগেই থাকে। প্রতিনিয়ত যানজটের কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বর্তমানে সেতুগুলো ভেঙে নতুন অথবা প্রশ্বস্ত করার দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, ১৯৮০ সালে জগন্নাথপুর থেকে সিলেটে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নলজুর নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জোরালো হয়ে উঠে। তখন এরশাদ সরকারের আমলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত আছাব আলীর প্রচেষ্টায় ১৯৮৪-৮৬ সালে খাদ্য গুদামের কাছে সরকারি ভাবে নলজুর নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ হয়। এ সেতু নির্মাণকালে ইকড়ছই ও হবিবপুর গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। পরে সাবেক পৌর মেয়র প্রয়াত হারুনুর রশীদ হিরন মিয়ার প্রচেষ্টায় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় ব্যক্তিগত ভাবে শহীদ মিনার এলাকায় নলজুর নদীর উপর আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হয়। এ সময় নলজুর নদীর উপর এ ২টি সেতু হওয়ায় জগন্নাথপুর থেকে সিলেটের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ হয়। এতে জনমনে আনন্দ দেখা দেয়।
এদিকে-কালের পরিক্রমায় দিনে দিনে জগন্নাথপুরে বাড়তে থাকে যানবাহন ও জনসংখ্যা। এসব পুরনো সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল সংকুলান হয় না। যে কারণে দীর্ঘদিন ধরে যানজটের ভোগান্তি লেগেই আছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে সুনামগঞ্জ-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের অধীনে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের প্রচেষ্টায় জগন্নাথপুর পৌর সদরের ভেতরে উন্নতমানের কাঙ্খিত বড় সড়ক হওয়ায় যানজট অনেকটা লাঘব হয়েছে। তবে পুরনো এসব সেতুর কারণে যানজটের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী জনতা। প্রতিদিন এসব যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই আগের ২টি পুরনো সেতু ভেঙে নতুন অথবা প্রশ্বস্ত করার দাবি এখন জোরালো হয়ে উঠেছে।
এক সময় এ ২টি সেতু জগন্নাথপুরবাসীর জন্য ছিল আশির্বাদ। বর্তমানে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই জনস্বার্থে জরুরী ভিত্তিতে এসব সেতু ভেঙে নতুন অথবা প্রশ্বস্ত করতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান সেতুতে যানজটে আটকেপড়া ভূক্তভোগী পথচারী জনতাদের মধ্যে অনেকে। এ বিষয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর রবিবার জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আক্তার হোসেন বলেন, এসব পুরনো সেতুর কারণে কষ্ট পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তাই পরিকল্পনামন্ত্রীর প্রচেষ্টায় নতুন সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) গোলাম সারোয়ার জানান, খাদ্য গুদামের কাছে পুরনো সেতু ভেঙে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে। শুধু সেতুর পাশে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি ও ট্রান্সফরমার সরানো হয়ে গেলে কাজ শুরু হয়ে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শহীদ মিনার এলাকার সেতুটিও পর্যায়ক্রমে হবে। তবে জগন্নাথপুর উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) আজিজুল ইসলাম আজাদ বলেন, এখানে খুঁটি সরিয়ে বিকল্প লাইন টানার সুযোগ নেই। তাই বাধ্য হয়ে মাটির নিচ দিয়ে লাইন নিতে হবে। এতে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় খরচের অর্থ ছাড় দিলেই আমাদের লাইন সরানোর কাজ শুরু হয়ে যাবে। এতে প্রায় ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগতে পারে।