জাতির উদীয়মান প্রজন্মের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি আমলে নিয়ে তাদের কোন ঝুঁকির আবর্তে না ফেলাটাই করোনাকালে মূল বিষয় হিসেবে বিবেচনায় থেকেছে সরকারের। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকার চিত্র দৃশ্যমান হলে শিক্ষাঙ্গন খুলে দেয়ার চিন্তাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভাবিত করে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দিয়ে। প্রায় ৮ মাসের দুঃসময় ঘরবন্দী থাকার যন্ত্রণা সহ্য করাও শিক্ষার্থীদের জন্য স্বস্তি কিংবা শান্তির ব্যাপার ছিল না। ইতোমধ্যে করোনার টিকা প্রদান এবং তা জনগণের মাঝে নিয়ে যাওয়াও ছিল উপস্থিত সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার অন্যতম নির্দেশনা। স্কুল-কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের টিকা কর্মসূচীর আওতায় আনতে সব ধরনের বিধিব্যবস্থা উন্মুক্ত করা সরকারের ছিল গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সব মিলিয়ে শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর স্থবিরতার যে কঠিন আবর্ত পড়ে, তা থেকে মুক্তির পথও খুঁজে বের করা সম্ভব হয় শেষ পর্যন্ত। করোনা তার বিধ্বংসী চিত্রকে ক্রমান্বয়ে সহনীয় করলে শিক্ষার বলয় তার যাত্রাপথকে অবারিত করে এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপরও সতর্কতা জারি করা হয়। মাস্ক পরা, হাত বিশুদ্ধকরণ থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেও বিধিনিষেধ জারি এক আবশ্যকীয় শর্ত। তবে অনেকেই সন্তানকে স্কুল-কলেজে রাখতে গিয়ে অনাবশ্যক যে ভিড়ের অবতারণা করি, এই মুহূর্তে তা মোটেও করা উচিত নয়। প্রতিদিন প্রত্যেকের শ্রেণীপাঠ না থাকলেও পঞ্চম, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাস নিয়মিত ৬ দিন করে চলবে। সেখানে শিক্ষার্থীদের যে ভিড়ের মোকাবেলা করতে হয়, তা করোনাকালের সঙ্কটকে আরও বিপন্নতায় নিয়ে যেতে পারে। মুখে মাস্ক এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে সামান্য গাফিলতি হলে পরিস্থিতি প্রতিকূলে যেতে সময় নেবে না।
শিক্ষাঙ্গনে স্বাস্থ্যবিধি-নিয়ম মাফিক মেনে চলাও অতি আবশ্যক। অভিভাবকদের অযাচিত ভিড় করাও বিধিসম্মত নয়। এই মুহূর্তে দেশের শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত শিক্ষাঙ্গনের পবিত্র আঙ্গিনাটি। উৎসব আর আনন্দের আমেজে সংশ্লিষ্টরা বিভোর, আবেগে আচ্ছন্ন। আনন্দ আয়োজনের এই সুবর্ণ সময়ে বাড়তি কোন দুর্যোগ যেন হানা দিতে না পারে সেটাও সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় থাকা বাঞ্ছনীয়। সদ্য প্রাণচাঞ্চল্যে আপ্লুত হওয়া শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানটিকে যেন অযাচিতভাবে কোন সঙ্কটের মোকাবেলা করতে না হয় তেমন দায়বদ্ধতা শুধু কর্তৃপক্ষের নয়, সবাইকেই দায়িত্ব নিয়ে সচেতন থাকাও সময়ের দাবি। জাতির মেরুদ- শিক্ষা কার্যক্রমকে তার যথার্থ অবদানে আর যেন পেছন ফিরে তাকাতে না হয়।