পুলিশ লাইন্সে স্মৃতিস্তম্ভ ‘স্মৃতি ৭১’র উদ্বোধন

4

স্টাফ রিপোর্টার :
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বীর শহিদদের স্মরণে সিলেটে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ ‘স্মৃতি ৭১’-এর উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুর ১টায় নগরীর রিকাবিবাজারস্থ জেলা পুলিশ লাইন্সে এ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি (উপ-মহাপরিদর্শক) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ পিপিএম ও সিলেট জেলা পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম।
সিলেটে বীর শহিদদের গণকবর সংরক্ষণ এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেও ‘স্মৃতি ৭১’ স্থাপন করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনের প্রচেষ্টায় ও জেলা পুলিশের উদ্যোগে এ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার নিশারুল আরিফ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, সিলেট জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি আল আজাদ, সিনিয়র সাংবাদিক ইকরামুল কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি মুহিত চৌধুরী, সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মণ রানা।
জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধে সিলেটে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন অনেকে। তাদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ অসংখ্য মানুষকে গণকবর দেওয়া হয় শহরের রিকাবিবাজার এলাকার পুলিশ লাইনসের ভেতর। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এখানে শহীদদের স্মরণে নির্মিত হলো স্মৃতিস্তম্ভ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় ব্যক্তিদের তথ্য অনুযায়ী- মুক্তিযুদ্ধের পরপরই গণকবরটি চিহ্নিত করা হয়। রিকাবিবাজারের পার্শ্ববর্তী মুন্সিপাড়াসহ শহরের বিভিন্ন এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হত্যা করে ফেলে রাখে। পরে এসব শহীদের মরদেহ এনে স্বজন ও পরিচিতজনেরা পুলিশ লাইনসের ভেতরে একটি ডোবায় গণকবর দেন। কতজনকে এখানে গণকবর দেওয়া হয়েছে, এমন সঠিক পরিসংখ্যান কোথাও সংরক্ষিত না থাকলেও গণকবর দেওয়া আটজন শহিদের নাম-তথ্য জানা গেছে। তাঁরা ওইসময় পুলিশ বাহিনীতে চাকরিরত ছিলেন। তাঁরা হলেন- সহকারী উপ-পরিদর্শক আবদুল লতিফ, হাবিলদার আবদুর রাজ্জাক, কনস্টেবল মোক্তার আলী, শহর আলী, আবদুস ছালাম, মো. হানিফ ব্যাপারী, মনিরুজ্জামান ও পরিতোষ কুমার।
এসব পুলিশ সদস্য ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল জিন্দাবাজার এলাকার তৎকালীন ন্যাশনাল ব্যাংকে (বর্তমানে সোনালী ব্যাংক) দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ব্যাংকের টাকা লুটের উদ্দেশ্যে পুলিশ সদস্যদের হত্যা করে। পরে ৬ এপ্রিল এসব শহিদকে পুলিশ লাইনসে গণকবর দেওয়া হয়। এর বাইরে শহরে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে শহিদ অনেককেও এখানে কবর দেওয়া হয়েছে।