কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগষ্টেপর (বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড) খুনীদের জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি দিয়ে, বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল। আর খালেদা জিয়া তার থেকে আরও একধাপ উপরে গিয়ে জনগণের সংসদ, সেই সংসদে ভোটারবিহীন নির্বাচনে এমপি বানিয়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী রশিদ-হুদাকে বসিয়েছিল, বিরোধী দলের নেতা পর্যন্ত বানিয়েছিল খুনী রশিদকে। প্রয়াত সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ এবং জেল হত্যাকাণ্ডে এই খুনীদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছিলেন। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে উত্থাপিত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী অধ্যাপক আলী আশরাফের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন প্রয়াত সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ। একজন ব্যবসায়ী, কৃষি বিষয়ক অভিজ্ঞ, সেই সঙ্গে একজন জ্ঞানী লোক ছিলেন। তিনি অধ্যাপনাও করেছেন, ব্যবসা করেছেন, রাজনীতিবিদও ছিলেন। আমরা একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী অভিজ্ঞ সংসদ সদস্যকে হারালাম।
বিকেল পাঁচটায় সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। শুরুতেই অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান, চলতি জাতীয় সংসদের কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক ডেপুটি স্পীকার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আলী আশরাফের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। আলোচনা শেষে শোক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এরপর অধ্যাপক আলী আশরাফসহ শোক প্রস্তাবে থাকা মৃত্যুবরণকারী বিশিষ্টজনদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা শেষে তাঁদের রুহের মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাফেজ নুরুল ইসলাম মাদানী। এরপর কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী চলতি সংসদের সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফের মৃত্যুতে দিনের অন্যান্য কার্যসূচী স্থগিত করে সংসদ অধিবেশন আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
পাঁচবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফসহ উত্থাপিত শোক প্রস্তাবের ওপর সংসদ নেতা শেখ হাসিনা ছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক , সাবেক মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হক, গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, বিকল্পধারার মেজর (অব.) আবদুল মান্নান এবং বিরোধীদলীয় চীফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও কাজী ফিরোজ রশীদ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অধ্যাপক আলী আশরাফ যে এলাকা থেকে নির্বাচন করতেন, সেই চান্দিনা (কুমিল্লা) এলাকা; যেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনী কর্নেল রশিদের বাড়ি। আর তার পাশেই খন্দকার মোশতাকের বাড়ি। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে একটা নির্বাচন হয়। বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থেকে সেই নির্বাচনটি করেছিলেন। সকল রাজনৈতিক দল সেই নির্বাচন বয়কট করেছিল। ভোটারবিহীন নির্বাচন- সারা বাংলাদেশে সেনাবাহিনী নামিয়ে দিয়ে, প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করে নির্বাচনটা করা হয়। সেই নির্বাচনে ওই চান্দিনা থেকে খুনী রশিদকে নির্বাচিত করে সংসদে নিয়ে আসেন এবং খালেদা জিয়া তাকে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসান। আর চুয়াডাঙ্গা থেকে নির্বাচিত করেছিল আরেক খুনী মেজর হুদাকে।
সংসদ নেতা বলেন, ১৫ আগষ্টের খুনীদের জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে। খালেদা জিয়া বোধহয় তার থেকে আরও একধাপ উপরে গিয়ে জনগণের এই সংসদ, সেই সংসদে একজন খুনীকে এনে বসায়। পরবর্তীতে ওই আসনে আবার আলী আশরাফ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। সব থেকে বড় কথা অধ্যাপক আলী আশরাফের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল ১৯৭৫-এর পর, যখন আমি ১৯৮০ সালে লন্ডনে। এর পরবর্তীতে তিনি সব সময় ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের যেমন প্রতিবাদ করেছেন, আবার ৩ নভেম্বর যে জেলহত্যাকাণ্ড তারও বিরোধিতা করেছেন, আর সেখানে তিনি সাক্ষীও দিয়েছেন খুনীদের বিরুদ্ধে।
প্রয়াত এই নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, অধ্যাপক আলী আশরাফ সমসাময়িক রাজনীতি, অর্থনীতি বিষয়ে ১৫টি বই লিখেছেন। এগুলো আগামী প্রজন্মকে সমৃদ্ধ করবে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন শীর্ষক একটা গবেষণামূলক বইও প্রকাশ করেছেন, যা আমাদের আগামীদিনের বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অবদান রাখবে, আর নবীন যারা সংসদে সদস্য হয়ে আসবেন তাঁরাও অনেক কিছু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন।
অভিজ্ঞ এই পার্লামেন্টারিয়ান সম্পর্কে তিনি বলেন, অধ্যাপক আলী আশরাফ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আমি প্রতিনিয়ত খবর নিয়েছি। আশা ছিল বেঁচে ফিরে আসবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য! অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে আমরা ফিরিয়ে আনতে পারলাম না। না-ফেরার দেশেই তিনি চলে গেছেন। এই সংসদের অনেক সদস্যকে আমরা হারিয়েছি। এটা সত্যিই দুঃখজনক। অধ্যাপক আলী আশরাফ একজন জ্ঞানী ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি বিভিন্ন সংসদীয় কমিটিতে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমরা একজন দক্ষ সংসদ সদস্যকে হারিয়েছি। তিনি নবীন সংসদ সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিতেন। অধ্যাপক আলী আশরাফের মৃত্যুতে দেশ একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ এবং নিবেদিতপ্রাণ সমাজ সেবককে হারাল।
বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের তাঁর বক্তব্যে বলেন, চলতি সংসদে অনেক সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন, প্রতিটি অধিবেশনেই শোক প্রস্তাব আনতে হচ্ছে। ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত অমায়িক ও সজ্জন মানুষ ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আলী আশরাফ। অত্যন্ত কাজপাগল, দক্ষ, বন্ধুবৎসল, জ্ঞানী ও অভিজ্ঞ এই পার্লামেন্টারিয়ানের মৃত্যু দেশের জন্যও অপূরণীয় ক্ষতি। অন্যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি আমৃত্যু সোচ্চার ছিলেন।
সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, অত্যন্ত স্পষ্টবাদী মানুষ ছিলেন অধ্যাপক আলী আশরাফ। অত্যন্ত জটিল ও বৈরী নির্বাচনী এলাকা থেকে সবাইকে সামলিয়ে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সফলভাবে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সঙ্কটে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন। অতি সমালোচক ও বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও তাঁর সম্পর্কে কখনও কোন কটু কথা বলতে পারেনি। তাঁর মতো ধৈর্যশীল, কুশলী ও অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ানের জায়গা কোনদিন পূরণ হবে না।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শিক নেতা ছিলেন অধ্যাপক আলী আশরাফ। বঙ্গবন্ধুর খুনী মোশতাক ও রশিদের বাড়ি ছিল কুমিল্লায়। অনেক নির্যাতন সহ্য করেছেন, কিন্তু খুনীদের সঙ্গে কোন আপোস করেননি। বৈরী অবস্থায় তাঁকে রাজনীতি করতে হয়েছে। অত্যন্ত জ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ ও অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান অধ্যাপক আলী আশরাফ অন্যায়কে কোনদিন প্রশ্রয় দেননি। সংসদেও তিনি যেটা বিশ্বাস করতেন, তা স্পষ্ট করে বলতেন। এমন সৎ, নিষ্ঠাবান নেতার মৃত্যু নেই।
কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক মরহুম অধ্যাপক আলী আশরাফের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেন, অত্যন্ত জ্ঞানৗ ও অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা কুমিল্লার চান্দিনা থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের অকুতোভয় ছাত্রনেতা ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন। ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের মীরজাফর, খুনী মোশতাকের সঙ্গে কুমিল্লার অনেক নেতা দেখা করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু অধ্যাপক আলী আশরাফ তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম বলেন, আলী আশরাফ ছিলেন সম্পর্কে আমার চাচা। আমার বাবার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। প্রায় প্রত্যেকদিন আমাদের বাসায় আসতেন, আমাকে ছেলের মতো দেখতেন। ১৯৭৩ সালে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন অধ্যাপক আলী আশরাফ। বঙ্গবন্ধু তাঁকে ডেকে বলেছিলেন- তুই ওইদিকে থাকতে পারিস না, আমাদের দিকে আয়। বঙ্গবন্ধুর এক ডাকে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তাঁর নির্বাচনী এলাকা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী রশিদের বাড়ি। জেল হত্যাকাণ্ডেরও সাক্ষী ছিলেন। আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রশ্নে কোন আপোস করেননি।
মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ অধ্যাপক আলী আশরাফ মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। আদর্শিক ও অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান ছিলেন। নির্বাচনী এলাকাতেও অত্যন্ত জনপ্রিয়, সজ্জন ও কর্মীবান্ধব নেতা ছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। মানবজীবন ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু তাঁর অবদান পুরো জাতি চিরদিন মনে রাখবে।
এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, অধ্যাপক আলী আশরাফ বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে সারা বাংলার গ্রাম-গঞ্জ ঘুরে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। উচ্চ মানসিকতাসম্পন্ন, জ্ঞানী ও অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান ছিলেন অধ্যাপক আলী আশরাফ। এত ভাল মানুষ ও সজ্জন, অভিজ্ঞ রাজনীতিকের মৃত্যুতে দেশের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা কোনদিন পূরণ হবার নয়।
বিরোধী দলের চীফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, অধ্যাপক আলী আশরাফের চলে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখের, কষ্টের। অত্যন্ত জ্ঞানী, অভিজ্ঞ, সজ্জন পার্লামেন্টারিয়ান ছিলেন তিনি। অত্যন্ত ভাল ও গুণী মানুষ ছিলেন। সদালাপি, বঙ্গবন্ধুর সহযোগী, ইতিহাসকে আমরা হারালাম।
জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, অধ্যাপক আলী আশরাফ একজন ভাগ্যবান ব্যক্তি, কারণ প্রথম সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। যখন কোন কথা বলতেন, মনের বিশ্বাস থেকে বলতেন, মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে সকল কাজ করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতভাবে কেউ বলার ছিল না, পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করে গেছেন আমৃত্যু।
বিকল্পধারার আবদুল মান্নান বলেন, এমন অভিজ্ঞ, সজ্জন ও জনপ্রিয়, বন্ধুসুলভ ব্যক্তি খুব কম পাওয়া যায়। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবনগর সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। অভিজ্ঞ এই পার্লামেন্টারিয়ান রাজনীতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য সর্বদা চেষ্টা করে গেছেন। কোভিডের মধ্যেও এক লাখ মানুষ জানাজায় অংশ নিয়েছেন, এতেই প্রমাণ হয়, কত জনপ্রিয় নেতা ছিলেন অধ্যাপক আলী আশরাফ।
মুজিবুল হক বলেন, অধ্যাপক আলী আশরাফ কুমিল্লার চান্দিনা থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। অথচ এই আসন থেকে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী কর্নেল রশিদকে ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে এমপি বানিয়ে এই সংসদকে কলঙ্কিত করেছিলেন খালেদা জিয়া। এমনকি ১৯৮৮ সালে এই খুনীর বড়ভাই ফ্রিডম পার্টির নেতাকেও এমপি বানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। আলী আশরাফ এই আসন থেকে বঙ্গবন্ধুর খুনী ও ফ্রিডম পার্টিকে চিরদিনের জন্য বিদায় দিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, অধ্যাপক আলী আশরাফ মৃত্যুর আগে আমাকে টেলিফোন করে বলেছিলেন- বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে দেখে যেতে পারব কোনদিন ভাবিনি। আমার জীবন স্বার্থক। কিন্তু দুঃখ থেকে গেল, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কারা ছিল সেটা জাতির সামনে উন্মোচন হলো না। আশা করি প্রধানমন্ত্রী তাঁর শেষ আশা পূরণ করবেন।
গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার অগ্রণী সেনানী ছিলেন অধ্যাপক আলী মনসুর। অত্যন্ত অমায়িক, সজ্জন ও মাটি-মানুষের মধ্যে থেকে উঠে আসা রাজনৈতিক নেতা ছিলেন তিনি। আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে নিয়ে দেশের জন্য কাজ করে গেছেন।
তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, প্রয়াত অধ্যাপক আলী আশরাফ একজন আপাদমস্তক সজ্জন, ভদ্রলোক ও বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। হিংসা-বিদ্বেষ ছাড়া নির্বাচনী এলাকায় সকল মানুষকে নিয়ে উন্নয়নের কাজ করে গেছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান।