সুনামগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের যৌথ অভিযান, ধর্ষক মাহমদ আলী অবশেষে গ্রেফতার

5

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী মাহমদ আলী (৩৫) অবশেষে গ্রেফতার হয়েছে। ১৪ আগষ্ট শনিবার ভোরে কোম্পানীগঞ্জ থানার ইছাকলস ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাগজুড় গ্রামে শ্বশুর ইছদ্দর আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে স্ত্রীর বড় ভাই সৌদি আরব প্রবাসী ওসমান গনীর স্ত্রীর সাথে আপত্তিজনক অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই আবু সায়েম চৌধুরী ও সদর মডেল থানার এসআই মোঃ শরীফ উদ্দিনের নেতৃত্বে ২ থানার সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা এ অভিযান পরিচালনা করেন। গ্রেফতারের পর ধর্ষক মাহমদ আলীকে তার গ্রামের বাড়ী ছাতক থানার কালারুখা ইউনিয়নের বোবরাপুর গ্রাম হয়ে জেলা সদরে নিয়ে আসার পথে পুলিশের নৌকা থেকে কালারুখা বাজার ঘাটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতার হাতে প্রহৃত হয় সে। ধর্ষক মাহমদ আলী সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন সংশোধন আইন ২০২০ এর ৭,৯ (১) ও ৩০ ধারায় দায়েরকৃত ধর্ষন মামলা নং ১৬ (জিআর ২০৪/২০২১) এর প্রধান আসামী।
মামলার বিবরণে প্রকাশ, গত ৩ জুন বৃহস্পতিবার বেলা ২টায়, সৎমা জুনু বেগম স্বামী সিরাজ মিয়াকে চায়ের সাথে নেশা পান করিয়ে তার স্কুল পড়ুয়া কিশোরী কন্যা কে ফুসলিয়ে জোরপূর্বকভাবে সুনামগঞ্জ সদর থানার সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর সদরগড় গ্রামের পিত্রালয় হতে সিলেটে নিয়ে যায়। ঐদিন রাত ১২টায় সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন মা আবাসিক হোটেলের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখে ভিকটিম সৎ কন্যাকে, পরকীয়া প্রেমিক মাহমদ আলীর দ্বারা জোরপূর্বক ধর্ষণ করায়। ভিকটিমের সৎমাতা ধর্ষণকারীর সহযোগী জুনু বেগমের সাথে উক্ত ধর্ষক মাহমদ আলীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে।
এ ঘটনায় ভিকটিমের খালা বাদী হয়ে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে, ১৯৪/২০২১নং নারী ও শিশু নির্যাতন (পিটিশন) মোকদ্দমা দায়ের করেন। মামলায় বিজ্ঞ আদালত তদন্তপূর্বক এফআইআরক্রমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর থানার পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। মামলায় ছাতক থানার কালারুখা ইউনিয়নের বোবরাপুর গ্রামের আছমত আলীর বখাটে পুত্র ৩ সন্তানের জনক মাহমদ আলী (৩৫) এবং একই গ্রামের মৃত মুসলিম আলীর কন্যা ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের পূর্ব সদরগড় ইব্রাহিমপুর গ্রামের সিরাজ মিয়ার স্ত্রী জুনু বেগম (৩৫) সহ অজ্ঞাত লোকদেরকে আসামী করা হয়।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোঃ সহিদুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি কে.এম নজরুল ইসলাম ও ছাতক থানার ওসি মো: নাজিম উদ্দিন ধর্ষণ মামলার আসামী জুনু বেগমকে প্রথম দফায় ও প্রধান আসামী মাহমদ আলীকে ২য় দফায় গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষণকারীর সহযোগী জুনু বেগমকে আমরা প্রথমে গ্রেফতার করেছি। বর্তমানে ঐ আসামী জেলহাজতে আছে। সর্বশেষ মূল আসামী ধর্ষক মাহমদ আলীকেও শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার বাগজুড় গ্রামের লোকজন বলেন, ধর্ষণের সহায়তাকারী জুনু বেগমকে গ্রেফতারের পরপরই ধর্ষণকারী মাহমদ আলী শ্বশুর বাড়িতে এসে আত্মগোপন করে। মামলায় পলাতক থাকাবস্থায় সে সৌদি আরবে যাওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। তার স্ত্রী রুবি বেগমের ৩ সহোদর সৌদি আরবে থাকায় বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণকালে পুলিশের হাতে আটক হয়।