বাগবাড়ি ছোটমণি নিবাসে দু’মাসের শিশুকে ছুঁড়ে মেরে হত্যা

4

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর বাগবাড়িস্থ ছোটমণি নিবাসের ২ মাস ১১ দিন বয়সী শিশু নাবিল আহমদকে খুন করেছেন শিশুদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকা। ছোটমণি নিবাসের কক্ষে থাকা সিসি টিভি ফুটেজে শিশুটিকে খুনের প্রমাণ পাওয়া যায় বলে জানায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনায় আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত ২২ জুলাই রাতে ছোটমণি নিবাসে কান্নাকাটি শুরু করে শিশু নাবিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শিশুদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকা। নাবিলের কান্নাকাটিতে বিরক্ত হয়ে এক পর্যায়ে তাকে বিছানা থেকে তুলে ছুঁড়ে ফেলে দেন সুলতানা। এ সময় বিছানার স্টিলের রেলিংয়ে বাড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে যায় শিশুটি। প্রচণ্ড আঘাতের ফলে তৎক্ষণাৎ জ্ঞান হারায় শিশু নাবিল। এরপর নাবিলের মুখের উপরে বালিশ চেপে ধরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন আয়া সুলতানা। এরপর প্রমাণাদি লুকানোর চেষ্টা করেন তিনি। তাকে সহযোগিতার করেন ছোটমণি নিবাসের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। ছোটমণি নিবাসের সিসি ক্যামেরায় শিশু নাবিল খুনের পুরো ঘটনাটি রেকর্ড হয়। এই রেকর্ডের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে আয়া সুলতানা ফেরদৌসীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ২৪ জুলাই কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (নম্বর-৪৫) দায়ের করে সিলেট সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এ মামলা দায়েরের তদন্ত করতে পুলিশ ছোটমণি নিবাসে গেলে বেরিয়ে আসে খুনের তথ্য। কক্ষের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ জানতে পারে বাচ্চাটিকে খুন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবু ফরহাদ বলেন, অপমৃত্যুর মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই হত্যার ঘটনাটি সামনে আসে। তদন্তে ছোটমণি নিবাসের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। সেই ফুটেজে শিশুটিকে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর এ ব্যাপারে এসপি, ডিসি, সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ সকলকে জানানো হয়। পরে ওই নারীকে আটকের সিদ্ধান্ত হলে শুক্রবার রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আমরা সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলেছি মামলা করতে। তারা যদি মামলা না করে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দেবে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনা এখনো তদন্তাধীন আছে। তদন্তে যদি ছোটমণি নিবাসের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, সিলেট সমাজসেবা কার্যালয়ের অধীনে ছোটমণি নিবাসে বর্তমানে আছে ৪২ শিশু। যাদের বয়স শূন্য থেকে ৭ বছর পর্যন্ত। বর্তমানে ৪২ শিশুর তত্ত্বাবধানে আয়া রয়েছেন পাঁচজন।