বাজারে ভেজাল ও মানহীন ওষুধের ছড়াছড়ি—এমন খবর সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই আসে। অনেক সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এমন অনেক ওষুধ ধরাও পড়ে। ভেজাল ও নকল ওষুধের কারখানা আবিষ্কৃত হয়। অনেকে ধরাও পড়ে। এবার নকল ওষুধ আমদানির একটি চক্রকে চিহ্নিত করেছে সিআইডি। এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এই ডিলারই সারা দেশে ওষুধ সরবরাহ করত। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি জানাচ্ছে, ১০ বছর ধরে নকল ওষুধের ব্যবসায় তিন সিন্ডিকেট জড়িত।
নকল ও ভেজাল ওষুধের কারণে জনস্বাস্থ্য যে হুমকির মুখে পড়তে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ওষুধ জীবন বাঁচাতে ব্যবহৃত হয়। ওষুধের ব্যবসা অন্য দশটি ব্যবসার মতো নয়। ওষুধ জীবন রক্ষাকারী একটি পণ্য। এই পণ্য যদি ভেজাল ও নকল হয়, তার প্রভাব পড়ে মানুষের শরীরে। রোগ থেকে বাঁচার জন্য মানুষকে ওষুধ কিনতে হয়। ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ মানুষকে রোগ থেকে মুক্তি দেয় না, বরং মৃত্যু ত্বরান্বিত করে। ওষুধ যদি ভেজাল হয়, জীবাণু মরবে না। রোগী তখন ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবে। অতীতে বেশ কিছু কম্পানির বিরুদ্ধে এমন অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এখন নকল ওষুধ আমদানি করা সিন্ডিকেটের সন্ধান পাওয়া গেল। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা না নিলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে।
জীবন রক্ষাকারী ওষুধের নকল আনা হচ্ছে বিদেশ থেকে। ক্যান্সারসহ দুরারোগ্য রোগের ওষুধ নকল করা হচ্ছে। কনটেইনারে পণ্য আনার নামে চীন থেকে নকল ওষুধ আনা হতো। ঢাকায় ওষুধ এনে তা ছড়িয়ে দেওয়া হতো সারা দেশে। দেশেও অতীতে নকল ওষুধ আমদানির কারখানা পাওয়া গেছে। নকল ওষুধ প্রস্তুত ও আমদানি দুটিই অপরাধ। যারা এ ব্যবসায় জড়িত, তাদের অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। একই সঙ্গে নকল ও ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান চালাতে হবে। সিন্ডিকেটের সন্ধান ও ডিলারের নাম যখন পাওয়া গেছে, তখন সরবরাহকারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নাম-ঠিকানা পাওয়া কঠিন হবে না। আমাদের বিশ্বাস, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গোয়েন্দা সূত্র ব্যবহার করে এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।