নবীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সরকারিভাবে বোরো ধান ও চাল ক্রয়ের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। কিন্তু হাওর প্রধান হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় বাম্পার ফলন হলেও লক্ষ্যমাত্রা মোতাবেক ধান কিনতে পারেনি সরকার। সরকারি গুদামের চেয়ে গ্রাম ও হাট-বাজারে দাম বেশি হওয়ায় এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি বলে জানিয়েছে নবীগঞ্জ খাদ্য বিভাগ।
জানা যায়, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় এবার ১৮ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়। ধান উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৮৫ টন। বিপুল পরিমাণ ধান উৎপাদন হলেও খাদ্য বিভাগ নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে মাত্র ১৬ শত ৯১ টন বোরো ধান এবং ৪ শত ৯৬ টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। ২৮ এপ্রিল থেকে ধান কেনা শুরু হয়ে তিন মাস চলে গেছে। আগামী ১৬ আগস্ট ধান-চাল ক্রয়ের মেয়াদ শেষ। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত নবীগঞ্জে ধান কেনা হয়েছে ১১ শত ৭৫ টন। যা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের চেয়েও একটু বেশি । সিদ্ধ চাল কেনা হয়েছে ২ শত ৮৫ টন, আতব চাল ২ শত ১১ টন। চাল সরবরাহ মিলাররা শত ভাগ সফল হলেও ধান কিনতে শত ভাগ সফল হয়নি নবীগঞ্জ খাদ্য বিভাগ।
নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের মুক্তাহার গ্রামের কৃষক রিন্টু দাশ বলেন, ‘ধান ক্রয়ের জন্য উপজেলা প্রশাসন লটারির আয়োজন করেছিল। ধানের দাম বাড়িতেই ভালো থাকায় কৃষকরা লটারিতে অংশ নিতে যায়নি। ধানের সরকারি মূল্য প্রতিমণ ১০৮০ টাকা। বাড়িতেই বেচা যায় মোটা ধান প্রতিমণ ৯৫০ টাকা, দাঁড়িপাল্লায় ১০০০ টাকা। চিকন ধান প্রতিমণ মিটারে ১১৫০ টাকা, দাঁড়িপাল্লায় ১২০০ টাকা। তাহলে লোকসান দিয়ে কোন কৃষক নিজের গোলার ধান নিয়ে নৌকা ও গাড়ি ভাড়া দিয়ে সরকারি গোদামে যাবে? এবার কৃষকরা ধান বাড়িতেই বিক্রি করছে, গুদামে যাচ্ছে না।
নবীগঞ্জ উপজেলা অটো রাইস মিল সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক গুরুপদ দাশ ময়না বলেন, দাম বেশি থাকায় কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে পারছে না সরকার । ধান-চালের দাম খুচরা বাজারে অনেক বেড়ে গেছে। তাই চুক্তিপত্র অনুযায়ী আমরা খুব কষ্ট করে চাল গুদামে দিয়েছি।
নবীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, ধান কেনার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বাজারে ধান চালের দাম বাড়ায় কৃষকরা সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে আসছেন না। ধানের দাম গুদামে ও বাড়িতে সমান হয়ে গেছে। তবে অন্যান্য উপজেলার চেয়ে আমাদের ধান কেনার হার অনেক বেশি। প্রায় অর্ধেক উপরে বেশি ধান ইতিমধ্যে ক্রয় করা হয়েছে।