সুনামগঞ্জ সীমান্ত জনপদে একই দিনে ৬ জনের মৃত্যু নিয়ে আতংক

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্জল ও সীমান্তজনপদে একই দিনে নারী পুরুষ সহ ৬ জনের স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে করোনা আতঙ্ক দেয়া দিয়েছে।
উপজেলার বাদাঘাট উত্তর ও বড়দল উত্তর ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে ওই ছয় নারী পুরুষ সোমবার দুপুর থেকে রাত ৯টার মধ্যে মৃত্যু বরণ করেন।
নিহতরা হলেন, উপজেলার বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের ইউনুছপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে বাদাঘাট বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম (৬২), একই ইউনিয়নের ননাই গ্রামের মৃত ইসমাইল মিয়ার ছেলে ব্যবসায়ী কাঞ্চন মিয়া, নাগরপুর গ্রামের মৃত হায়দর আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তোলা মিয়া (৩২), উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের পৈলনপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস ছাক্তারের ছেলে বাদাঘাট বাজারের দর্জি ব্যবসায়ী জুলহাস মিয়া (২৮), একই ইউনিয়নের মাণিগাঁও গ্রামের আল আমিনের স্ত্রী জবা বেগম (২৫), উপজেলার বোরোখাড়া গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন (৫২)।
মঙ্গলবার নিহতের পরিবারের লোকজন ও এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন ওই ছয় নারী পুরুষের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
উপজেলার বড়দল উওর ইউনিয়নের বোরোখাড়া গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় ইউপি সদস্য শবদর আলী জানান, বোরোখাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলার একটি কক্ষের দরজা ভেঙ্গে সোমবার সন্ধায় গ্রামের নুরুল আমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি আরো বলেন, আকস্মিক এমন মৃত্যু নিয়ে গ্রামের লোকজনের মধ্যে করোনা আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলার মাণিগাঁও গ্রামের নিহত গৃহবধূর ভাসুর হাছেন আলী ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ১ শিশু কন্যার জননী জবা বেগমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ নিয়ে পরে কথা বলবেন বলে জানান।
অপরদিকে উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজার সহ উপজেলার সীমান্ত জনপদের হাটবাজার সহ গোটা উপজেলার হাট বাজার গুলোতে চলমান কঠোর লকডাউনে কোন কোন ব্যবসায়ী, অটো মোটরসাইকেল চালক এনকি ক্রেতাদের অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বলেও অভিযাগে উঠেছে। আইনশৃংখলা বাহিনী যখন যেখানে অবস্থান করেন সেখানে কিছুটা দৌড়ঝাপ, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হলেও আইনশৃংখলা বাহিনী সরে যাবার সাথে সাথে বেড়ে যাচ্ছ জনসমাগম ও যান চলাচল।
এদিকে উপজেলার মাণিগাঁও গ্রামের গৃহবধূর আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে সীমান্ত জনপদের ওই গ্রামবাসীর মধ্যেও করোনা আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে গ্রামের একাধিক ব্যাক্তি মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে জানান।
মঙ্গলবার তাহিরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ তরফদার জানান, ওই দুটি ইউনিয়নে একই দিনে ছয় জনের মৃত্যুর বিষয়টি থানা পুলিশকে কেউ অবহিত করেননি।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ আবু আহমদ শাফী বললেন, এ উপজেলায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা অবধি কোভিঢ- ১৯ জন পজেটিভ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং উপজেলায় সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী করোনা পজেটিভ দুইজন মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি আরো বলেন, একই দিনে ছয় নারী পুরুষ মৃত্যুর বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কেউ অবহিত করেননি এরপরও খোঁজ নিয়ে দেখব কি কারনে ওই ছয় জন মৃত্যু বরণ করেছেন।
মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রায়হান কবির বললে, প্রদিদিন উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জরিমানা আদায় করা হচ্ছে।, কোভিড প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক সহ সমাজের সব পর্যায়ের লোকজনকে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়েছে। একই দিনে নারী পুরুষ সহ উপজেলার ছয় জনের মৃত্যুর বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই ,তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি কি কারণে ওই মানুষজন একই দিনে মৃত্যুবরণ করছেন।