পিন্টু দেবনাথ কমলগঞ্জ থেকে :
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের এ অঞ্চলের বোরো ফসল যদি বন্যার পানিতে ডুবে যায় তা হলে উৎপাদনের ২৫ শতাংশ ধান ক্ষতি হবে। আবহাওয়া অফিসের থেকে তথ্যে সিলেট অঞ্চলে ২১ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে হাওর অঞ্চলে বন্যা হয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে হাওর অঞ্চলে ৮০ শতাংশ ধান পেকে গেছে। যদি বন্যা হয় তাহলে সব ধান পানিতে তলিয়ে যাবে। এতে কৃষকদের যেমন ক্ষতি হবে, ঠিক তেমনি আমাদেরও ক্ষতি হবে। কারন এই ধান থেকে চাল হয়েই আমাদের আহার করতে হয়। ইউএনও নজরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওরের বরুনা গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষক রুবেল মিয়া ধান কাটার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটাতে যোগ দেন উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের ১৯ জন কর্মকর্তা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষক ও দপ্তরি, ৩০ জন ছাত্রলীগ কর্মী, সবুজবাগ ম্যারাথন গ্রুপের ১২ সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয় চা সংসদের ৯ জন, উদ্বীপ্ত তারুণ্য সংগঠনের ৭ জন ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, এ বছর শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৯৬৫২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্য ২৭২৭ হেক্টর জমি হাওরের নিম্নাঞ্চলে। ইতিমধ্যে ২০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আর ২০ শতাংশ ধান কেটে ফেলতে পারলে প্রাকৃতিক ঝুঁকি থাকবে না।
চলতি সপ্তাহে সিলেট অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা থাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুধবার (২১ এপ্রিল) উপজেলা প্রশাসনের ফেইসবুক পেইজে স্বেচ্ছাশ্রমে হাওরে কৃষকের ধান কেটে দেয়ার আহ্বান জানান। তাঁর ডাকেই সাড়া দিয়ে সবাই মিলে ধান কাটা উৎসবে নেমে পড়েন। তারা বরুনা গ্রামের কৃষক রুবেল মিয়ার আড়াই কেয়ার ও জসিম উদ্দিনের দেড় কেয়ার ধান কেটে দেন।
কৃষক রুবেল মিয়া জানান, তিনি শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছিলেন না। এই ধান কাটাতে তার পাঁচ হাজার টাকা খরচ হতো। কৃষক জসিম উদ্দিন জানান, দুর্যোগের পূর্বাভাস জেনে তিনি খুব চিন্তায় ছিলেন। তার জমির ধান কেটে দেয়ায় তিনি এখন নিশ্চিন্ত।
স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে ধান কাটতে অংশ নেন ইউএনও নজরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নেসার উদ্দিন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জহর তরফদার, প্রশাসনের কর্মকর্তা, শিক্ষক, সবুজবাগ ম্যারাথন গ্রুপ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার নেতৃবৃন্দ।