২০ মে চা শ্রমিক দিবস এর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, মজুরিসহ ছুটি ও পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ’র উদ্যোগে ১৬ এপ্রিল বিকাল ৪টায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সংগঠক অধীর বাউরীর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন,বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলার নেতা অজিত রায়, চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ এর সংগঠক বাদল বাউরী, স্বপ্না, শিউলী বাউরী, সঞ্জিত বাউরী প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন রানা বাউরী।
বক্তারা বলেন, ২০ মে চা শ্রমিকদের রক্তস্নাত লড়াইয়ের একটি দিন। আজ থেকে ১’শ বছর পূর্বে বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে যখন বিদেশী পণ্য বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলন চলছিল, তারই অংশ হিসেবে চা শ্রমিকরা সংগঠিত করেন ঐতিহাসিক “মুল্লুকে চল” আন্দোলন। বৃটিশ মালিকদের বাগান বর্জন করে তাঁরা পূর্বপুরুষের ভিটায় ফেরত যেতে চেয়েছিলেন। বিহার, উড়িষ্যাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে একদিন মালিকরা প্রতারণা করে শ্রমিকদের আসামের বাগানে নিয়ে আসে। তারা বলেছিল আসামের বাগানে “গাছ হিলায়েগা, তো পায়সা মিলেগা” অর্থাৎ জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি আসবে। কিন্ত আসামে এসে তাদের পড়তে হয় এক দাসোচিত জীবনে, মানবিক জীবন থেকে তারা ছিটকে পড়েন। অনেকটা জন্তু জানোয়ারের স্তরে নেমে আসে চা শ্রমিকদের জীবন। নিজেদের জীবনের এই অবরুদ্ধ ক্ষোভ ও বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের প্রভাবে শুরু হয় এই ঐতিহাসিক মুল্লুকে চল আন্দোলন। সিলেট থেকে পায়ে হেঁটে ৩০ হাজার চা শ্রমিক চাঁদপুর স্টীমার ঘাটে পৌঁছান। পরবর্তী পথ যেতে হয় স্টীমারে। চাঁদপুরে যাওয়ার পর চা শ্রমিকদের উপর হামলে পরে ভয়ংকর গুর্খা বাহিনী। গুলি করে হত্যা করে শত শত নিরস্ত্র চা শ্রমিকদের। মৃত লাশগুলিকে পেট কেটে মেঘনায় ফেলে দেয়া হয়। আন্দোলন দমন করতে গ্রেফতার করা হয় আন্দোলনের নেতা পন্ডিত গঙ্গ দয়াল দীক্ষিতসহ অসংখ্য চা শ্রমিকদের। জেলে পন্ডিত গঙ্গা দয়াল দীক্ষিত অনশন করে আত্মাহুতি দেন। চা শ্রমিকদের এই সংগ্রামী ইতিহাস আড়াল করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি