জৈন্তাপুরে আ’লীগ নেতা লিয়াকত ও গোলাপগঞ্জে সাবেক পৌর মেয়র পাপলুর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
জৈন্তাপুরে আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত আলী ও গোলাপগঞ্জের বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক পৌর মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলুসহ তাদের সহযোগিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি জমিদখল, ভুয়া প্রকল্পে টাকা উত্তোলনসহ বিভিন্ন অভিযোগে সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
২০১৮ সালের ৭ মার্চ সিলেটের সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে জৈন্তাপুরের করগ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের ছেলে মনির আহমদ বাদী হয়ে জৈন্তাপুরের নিজপাট ইউনিয়নের ৪ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি ভূমি অবৈধভাবে কেনাবেচার অভিযোগে এ মামলা করেন।
মামলায় জৈন্তাপুর উপজেলা ভূমি অফিসের এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার-ভূমি) মুনতাসির হাসান, সার্ভেয়ার নুরুল ইসলাম, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নিত্যানন্দ দেব ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, লিয়াকত আলীসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছিল। অন্য আসামিরা হলেন জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট গ্রামের মৃত আবদুল মালিকের ছেলে আখলাকুল আম্বিয়া, বাউরবাগ গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলী ওরফে টেনাইয়ের ছেলে মো. মুসলিম আলী, মো. কলিম উদ্দিনের ছেলে মো. দেলোয়ার হোসেন, সত্যেন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে সঞ্চয় বিশ্বাস, মঈন উদ্দিনের ছেলে ফরিদ উদ্দিন, উমনপুর গ্রামের মৃত মুছিম আলীর ছেলে আপ্তাব আলী, জৈন্তাপুর উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার ও ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ইনচার্জ) খালেদুর রহমান, জৈন্তাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সাবেক সহকারী কর্মকর্তা আবদুর রহিম, বীরখাই গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সাবেক সাবরেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার, দলিল লেখক আজির উদ্দিন, দলিল লেখক মীর জাহান, পূর্ণানগর গ্রামের মো. নজির উদ্দিনের ছেলে মোশাহিদ আলী।
তদন্ত শেষে দুদক মামলার আসামী আখলাকুল আম্বিয়া চৌধুরী, মো. মুসলিম আলী, লিয়াকত আলী, আজির উদ্দিন, মো. মীর জাহান ও মো. বোরহান উদ্দিন সরকারকে আসামী করে চার্জশিট দাখিল করা হয় আদালতে। এর আগে বির্তকিত আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত আলী ও জৈন্তাপুরের সাবেক সাব রেজিস্ট্রারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে গত ১ মার্চ মামলা দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালায় চার্জশিট অনুমোদন করা হয়। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলায় অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদুর রহমানসহ ১০ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এদিকে গোলাপগঞ্জে ভুয়া ১২ প্রকল্পের নামে টাকা আত্মসাৎ, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে দুদকের করা মামলায় গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা জাকারিয়া আহমদ পাপলু, তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী ও ভারপ্রাপ্ত সচিব যুগেশ্বর চ্যাটার্জি, কার্যসহকারী সাব্বির আহমদ এবং অফিস সহকারী জহিরুল ইসলাম বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুদক। ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর দুদক সিলেট অফিসের সহকারী পরিচালক দেবব্রত মন্ডল বাদি হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় এ মামলা করেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৫ সালে ১২টি ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে তৎকালীন মেয়র পাপলু প্রভাব খাটিয়ে প্রকল্পের ৬ লাখ ২৯ হাজার ৭৭২ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তদন্ত শেষে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা জাকারিয়া আহমদ পাপলুসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সিলেট জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নুর-ই-আলম বলেন, জৈন্তাপুরের লিয়াকতসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলায় চার্জশিট এবং গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু, তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী ও ভারপ্রাপ্ত সচিব যুগেশ্বর চ্যাটার্জিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়েছে।
এর আগে গত ১ মার্চ লিয়াকতসহ ৬ জন ও ৮ ফেব্রুয়ারি গোলাপগঞ্জের সাবেক মেয়র পাপলুর বিরুদ্ধে চাজর্শিট অনুমোদন করে দুদক।