আতিকুর রহমান মাহমুদ ছাতক থেকে :
সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লাফার্জ হোলসিম কর্তৃক খোলাবাজারে ক্রাশিং চুনাপাথর বিক্রির প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সভা থেকে চুনাপাথর, সিমেন্টসহ লাফার্জ পণ্য পরিবহন না করার ঘোষনা দেয়া হয়েছে। কার্গো, বাল্কহেড, ইঞ্জিন চালিত নৌকাসহ সকল প্রকার নৌ-পরিবহন লাফার্জ পণ্য পরিবহন না করার জন্য সমাবেশ থেকে অনুরোধ করা হয়। পাশাপাশি আগামী ৪ এপ্রিলের মধ্যে অত্র অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের প্রাণের দাবি ক্রাশিং চুনাপাথর খোলাবাজারে বিক্রি বন্ধ না করা হলে লাফার্জ হোলসিমের পণ্য পরিবহনে সড়ক ও নৌ-পথ বন্ধ করা সহ লাফার্জ পণ্য বর্জন করার হুমকি দেয়া হয় সমাবেশ থেকে। ছাতক শহরের ট্রাফিক পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ এসব ঘোষণা দেন বক্তারা।
বৃহত্তর ছাতকের চুনাপাথর, পাথর, বালু ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের সমন্বয়ে গঠিত ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক, ছাতক লাইষ্টোন ইম্পোর্টার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স গ্রুপের প্রেসিডেন্ট, সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্ট্রিজের পরিচালক ও এফবিসিসিআই’র ভুমি মন্ত্রনালয় কমিটির
চেয়ারম্যান আহমদ শাখাওয়াত সেলিম চৌধুরী। অধ্যাপক ফখর উদ্দিন স্বপন ও ইর্ম্পোর্টার মুহাম্মদ শাহরীয়ার ইনুর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ছাতক সরকারী ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঈন উদ্দিন আহমদ, ছাতক পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল ওয়াহিদ মজনু, জেলা ন্যাপের সাধারন সম্পাদক আব্দুল ওদুদ, আওয়ামীলীগ নেতা সৈয়দ আহমদ, পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী ফজুল মিয়া চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য আজমল হোসেন সজল, ছাতক লাইষ্টোন ইম্পোর্টার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স গ্রুপের সেক্রেটারী অরুন দাস, পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারন সম্পাদক সামছু মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ চুনাপাথর আমদানীকারক গ্রুপের মুজিবুর রহমান মিন্টু, লোভাছড়া পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ব্যবসায়ী মাওলানা আকিক হোসাইন, ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, কাজী আনোয়ার মিয়া আনু, নূর উদ্দিন, পৌর কাউন্সিলর ইরাজ মিয়া, শফিকুল হক, হাজী ছালেক মিয়া, জেলা রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কয়েছ আহমদ, ব্যবসায়ী আশরাফুর রহমান চৌধুরী, নৌ-পরিবহন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নজরুল চৌধুরী, বালু ব্যবসায়ী সংগঠনের সাবেক সাধারন সম্পাদক সামছু মিয়া, ব্যবসায়ী আব্দুল মোনায়েম, লেবার সর্দার সমিতির সভাপতি তজম্মুল আলী প্রমুখ।
সভায় বক্তরা বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন চুক্তি লঙ্ঘন করে লাফার্জ কর্তৃপক্ষ অধিক লাভবান হওয়ার স্বার্থে ভারত থেকে আমদানীকৃত চুনাপাথর কারখানার অভ্যন্তরে ক্রাশিং করে অবৈধভাবে খোলাবাজারে বিক্রি করছে। আমদানিকৃত চুনাপাথর দিয়ে সিমেন্ট ও ক্লিংকার উৎপাদন ও বিপনন করার শর্তে বাংলাদেশ ও ভারতের সাথে লাফার্জের প্রতিষ্ঠাকালীন চুক্তি থাকলেও কর্তৃপক্ষ এ চুক্তি লঙ্ঘন করে চুনাপাথর ক্রাশিং করে খোলাবাজারে বিক্রি করে এখানের ঐতিহ্য চুনাপাথর ব্যবসা ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাই স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কার্যক্রমের সাথে বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান লাফার্জকে সম্পৃক্ত না হওয়ার জন্য ব্যবসায়ীরা বার-বার যৌক্তিক প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানে প্রতিষ্ঠাকালিন চুক্তি ও ব্যবসায়ীদের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে খোলাবাজারে চুনাপাথর বিক্রি করছে লাফার্জ। যে কারণে চুনাপাথর আমদানি ও ব্যবসার সাথে জড়িত ছাতক, ভোলাগঞ্জ, তামাবিল, বড়ছড়া, বাগলি শুল্ক ষ্টেশনের কয়েক শ’ ব্যবসায়ী বর্তমানে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। পাশাপাশি চুনাপাথর ব্যবসার সাথে জড়িত লক্ষাধিক শ্রমিকের রুটি-রুজির পথও রুদ্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি সুরাহা করতে ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা মন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।