উপলক্ষটাই অভূতপূর্ব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ। সেই সঙ্গে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এমন ক্ষণ তো আর আসেনি বাঙালির জাতীয় জীবনে। তাই সময়টা অসাধারণ, অত্যন্ত আনন্দ আর গৌরবের। হ্যাঁ, করোনার অতিমারী শেষ হয়নি। বরং সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। কিন্তু শতভাগ সুরক্ষা নিলে আর সমস্যা কী! স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় সামান্যটুকু ছাড় না দিলে আর কিসের ভয়। এমন একটা অসামান্য উপলক্ষকে চিরস্মরণীয় করে রাখাটাই সমীচীন। তাই দশ দিনব্যাপী উৎসব শুরু হয়ে গেছে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর দিন থেকেই। এই আনন্দযাত্রার সমাপনী হবে ঠিক দশ দিন পর স্বাধীনতা দিবসে।
মুজিব চিরন্তন শীর্ষক এই অসাধারণ মহাআয়োজনের প্রতিটি দিনই বিশেষ বিশেষ বার্তা নিয়ে আসছে জাতির সামনে, আসছে আনন্দ-উপকরণ নিয়ে। বাঙালি ফিরে তাকাচ্ছে তার শিকড়ের দিকে আরও একবার। রাজধানী ইতোমধ্যে সেজেছে উৎসবরূপে। বিশেষ করে রাতের বেলা পতাকার রঙে লাল-সবুজে উজ্জ্বল আলোকসজ্জা এবং তার ভেতরে বিভিন্ন জাতীয় প্রতীক উপস্থাপন অত্যন্ত আকর্ষণীয় রূপ লাভ করেছে। সারাদেশেই মুজিব জন্মশতবার্ষিকীর উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। তবে সঙ্গত কারণেই মূল দৃষ্টি রাজধানী ঢাকায়। গুরুত্বপূর্ণ সড়কের দুই পাশে, সড়কদ্বীপ ও মোড়ে মোড়ে আকর্ষণীয় উপস্থাপনা চোখে পড়ে। যেদিকেই চোখ যায়, অবিসংবাদিত নেতার প্রতিকৃতি। ব্যানার। ফেস্টুন। সবখানেই উৎসবের আমেজ। জাতির পিতার হাসিমুখ, ভাষণ, উদ্ধৃতি ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছে বিচিত্রমাত্রিক সাজসজ্জায়।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানাতে উদ্বোধনী দিনে এক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথি হয়ে এসেছিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ্। করোনার কারণে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় স্বকীয় আঙ্গিক ও শব্দচয়নে বাঙালির নেতাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুুডো। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক মার্ক টালিও ভিডিও বার্তায় শ্রদ্ধা জানান। আজকের বিশ্বের প্রভাবশালী নেতারা মুজিবের জাতিরাষ্ট্র গঠনের সংগ্রাম রাষ্ট্রনৈতিক দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন। বঙ্গবন্ধুর ন্যায়ের সংগ্রাম ও উদার অসাম্প্রদায়িক মানবিক চেতনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। সব মিলিয়ে সত্যিকারের এক বৈশ্বিক পরিবেশনা। বিশ্বনেতাদের ভূয়সী প্রশংসা ও বাংলাদেশের প্রতি তাদের সম্প্রীতির মনোভাব অবশ্যই এক অনন্য অর্জন।