কাজিরবাজার ডেস্ক :
যুদ্ধাপরাধী, জিয়াউর রহমানসহ বিএনপি নেতাদের নামের বহু প্রতিষ্ঠান এমনকি সরকারী প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার তুঘলকি কান্ডের পর অনেকটা অন্যের ঘাড়ে দায় চাপিয়েই ব্যাখ্যা দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দীর্ঘ নয় বছর পর মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের একটি চক্রের কারসাজিতে এমপিওভুক্ত করার বিশাল কর্মযজ্ঞ প্রশ্নের মুখে পড়লেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় সকল দায় যেন অনলাইন আর আবেদন করা প্রতিষ্ঠানের। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় এমপিওভুক্তি করা হয়নি। কোন কোন আবেদনকারী ভুল তথ্য দিয়ে এমপিওর তালিকাভুক্ত হয়েছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করে বাতিল করা হবে।
রবিবার শিক্ষামন্ত্রী রাজধানীর ‘ব্যানবেইস’ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের অবস্থানের কথা তুলে ধরে বলেছেন, রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী ও বিএনপি নেতাদের প্রতিষ্ঠিত যেসব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে সেগুলো তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে না। তবে ওইসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ যদি প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের আবেদন করে সে ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয়ে কোন প্রতিষ্ঠান অযোগ্য হলে ফের যাচাই-বাছাই করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন, ব্যানবেইসের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ ফসিউল্লাহ, এমপিওভুক্তির তালিকা তৈরির দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক বিবেচনায় এমপিওভুক্তি করা হয়নি দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোন কোন সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধী, কুখ্যাত ব্যক্তি এবং স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের নামে বা বিতর্কিত কোন রাজনীতিকের নামে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী বা কুখ্যাত ব্যক্তিদের নামে প্রতিষ্ঠিত চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ পূর্বক শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিবর্তন করে চলেছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। স্থানীয় পর্যায়ে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান থাকলেও এ সংক্রান্ত সকল তথ্য মন্ত্রণালয়ে নেই। স্থানীয় পর্যায় থেকে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি/স্থানীয় প্রশাসন/স্থানীয় জনগণ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরে আনলে তাৎক্ষণিভাবে এ বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করবে।
মন্ত্রী বলেন, যেহেতু এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে কোন রকম রাজনৈতিক বিবেচনা করা হয়নি শুধু যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত করা হয়েছে। সেহেতু কোন বিতর্কিত রাজনীতিকের নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও একইভাবে নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যেতে পারে।
কোন অযোগ্য প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়নি এবং যোগ্য প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়নি দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, কোন কোন আবেদনকারী ভুল তথ্য দিয়ে এমপিওর তালিকাভুক্ত হয়েছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করে বাতিল করা হবে। সরকারী হওয়া প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয় সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হয়েছে। সেটিও তালিকায় এসেছে, এটা একটা ভুল। তবে, দুই হাজার ৭৩০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই একটি ভুল যা কোন শতাংশের হিসেবে আসে না।
এমপিওভুক্তিতে ভুলের দায় কার? সাংবাদিকের করা এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোন ভুল হয়নি। তাই শাস্তির প্রশ্ন আসে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে প্রক্রিয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত করা হয়েছে তাতে কোন অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা বা কোন যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত না করার কোন সুযোগ ছিল না। অর্থাৎ এমপিওভুক্তির নীতিমালা পরিপূর্ণ অনুসরণ করা হয়েছে।
এমপিওভুক্তির শর্ত অনুযায়ী এমপিওভুক্তির আদেশ জারির পর যেকোন পর্যায়ে যদি প্রমাণিত হয় যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটি কোন শর্ত ভঙ্গ করেছে বা অসত্য তথ্য প্রদান করে এমপিওভুক্ত হয়েছে, সে সমস্ত প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্তির আদেশ কার্যকর হবে না। পাশাপাশি অসত্য তথ্য প্রদানকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।