স্টাফ রিপোর্টার :
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হয়েছে। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মেরাজে গমনের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ঘটনা উপলক্ষে সিলেটের মসজিদ মাদরাসায় আলোচনা সভা ও দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রাতকে আমাদের দেশে সাধারণত শবে মেরাজ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ইসলাম ধর্ম মতে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) নবুওয়াত প্রাপ্তির একাদশ বছরের (৬২০ খ্রিস্টাব্দ) রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে হযরত জিবরাইল (আ.)-এর সঙ্গে বোরাকে চড়ে পবিত্র কাবা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তম আকাশের ওপর আরশে আজিমে আল্লাহর দিদার লাভ করেন। মুসলিমরা ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে এ রাতটি উদযাপন করেন। ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব আছে, কেননা এ মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ অর্থাৎ নামাজ মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যক (ফরজ) করা হয় এবং এ রাতেই দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মুসলিমদের জন্য নিয়ে আসেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)।
এদিকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ইসলামপুর পশ্চিম মহল্লারবাসীর উদ্যোগে পবিত্র মেরাজুন নবী (সাঃ) উপলক্ষে আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল গত ১১ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিম মহল্লা জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়।
পশ্চিম মহল্লা জামে মসজিদেও মোতোয়ালি আলহাজ্ব ইসহাক আলী লন্ডনী’র সভাপতিত্বে মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বয়ান পেশ করেন জকিগঞ্জ উপজেলা সচেতন নাগরিক ফোরাম সিলেটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক ও গবেষক হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মেরাজ রজনীতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বোরাকে করে মক্কা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস নিয়ে যান। সেখান থেকে সপ্তম আসমানের উপরে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবার পর্যন্ত নিয়ে যান। আবার ঐ রাতের ভিতরে তিনি ফিরে আসেন। ফিরে এসে তিনি ফজরের নামাজ আদায় করেন। এই ঘটনা কোরআনেও আছে, সহীহ হাদীসে আছে। কেউ যদি অস্বীকার করে, তাহলে তার ঈমান থাকবে না। কোন যুক্তিতে ধরুক বা না ধরুক, বিজ্ঞান এটাকে স্বীকার করুক আর না করুক, তবুও আমাকে বিশ্বাস করতেই হবে। যেহেতু কুরআন হাদীসে আছে।
তিনি আরো বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনেক কিছু দেখানো হয়, অনেক কিছু জানানো হয়। যত বিষয়ে আমরা না দেখে ঈমান রাখি, সে সব কিছু তাঁকে দেখানো হয়। এটাই মেরাজের শিক্ষা যে, গায়েবের সব বিষয়ে আমাদের বিশ্বাস ও ইয়াকীনকে আরো দৃঢ় করবো এবং মেরাজের রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযসহ যেসব বিধান আল্লাহর কাছ থেকে নিয়ে এসেছিলেন সেসব বিধান পালনে পাবন্দ হওয়া।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শবে মেরাজের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের জীবনকে সুন্দর করার তৌফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।
মোঃ সুরমান আহমদ ও মোঃ শেখ সিদ্দিকুর রহমানের পরিচালনায় মাহফিলে ইসলামপুর পশ্চিম মহল্লা জামে মসজিদের সেক্রেটারি তেরাব আলী মরিল বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে মোঃ জুনেল আহমেদ, মাষ্টার মোঃ আব্দুল আহাদ, এডভোকেট মোঃ কামাল আহমেদ, সুরমান মিয়া, বাবুল মিয়া, মাওলানা মোঃ আব্দুল কাদির প্রমুখ উপস্থিতি ছিলেন।
প্রধান অতিথি বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকীর মোনাজাতের মধ্যে মাধ্যমে মাহফিল শেষ হয়।