জেড.এম. শামসুল :
অগ্নি ঝরা মার্চের ৫ম দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে পালন করা হয় সর্বাত্মক হরতাল। ঢাকার বায়তুল মোকাররমের চত্বরে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের সমাবেশ। স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে খন্ড খন্ড মিছিলে ভরে যায় ঢাকা শহর। এসব খন্ড খন্ড মিছিল হাতে লাঠি নিয়ে ধানমন্ডির ৩২নং ভবনের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে মিলিত হয়। এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন ১ মার্চ থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রায় ৪শ’ বাঙালিকে হত্যা করেছে। এদিন নিউ মার্কেট পয়েন্টে ন্যাপ মোজফফর এর উদ্যোগে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ন্যাপ নেতা মহিউদ্দিন আহমদ, মতিয়া চৌধুরী, পংকজ ভট্টাচার্য প্রমুখ। এ সমাবেশে মহিউদ্দিন আহমদ পাকিস্তান সরকারের গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানান। এই দিনে পাকিস্তানী সামরিক জ্যান্তা ইয়াহইয়া খান, জেনারেল ইয়াকুবকে অপসারণ করে টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর ও সামরিক প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করে। প্রতিবাদে ফেটে পড়ে বাংলার সাধারণ মানুষ।
ঢাকা শহরসহ সর্বত্র অব্যাহত থাকে স্বাধীনতার আন্দোলন। এদিন পূর্ব বাংলা সাংবাদিক ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বাধীনতার দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠে। রাত-দিন চলে সভা-সমাবেশ আর মিছিলে মিছিলে মুখরিত ঢাকা শহর।
এদিকে ন্যাপ মোজাফফর ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের একাত্মতা ঘোষণার পর সকল ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে। সারা দেশে ছাত্র জনতা রুখে দাঁড়ায় পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে। সারা দেশে এক গণবিস্ফোরণের রূপ নেয়।