শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের ব্যাপারে মৃত্যুদন্ডের বিধান, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি রোধে দ্রুত ন্যায়পাল চালু, চাল-তেলের মূল্য সহ দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোর দাবিতে দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে গতকাল ১৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকাল ৩টায় কোর্ট পয়েন্টে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ সভাপতি ইকবাল হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মকসুদ হোসেন বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি জাতীয় ইংরেজি এক দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুদকের কর্মকান্ডে সরকারের হস্তক্ষেপকে মহামান্য হাইকোর্ট নগ্ন হস্তক্ষেপের সামিল বলে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে দুদক চেয়ারম্যান মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে দুর্নীতির বিষয়ে যে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন সেই প্রতিবেদনে দেশের ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র প্রকাশ পায়নি। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দায়িত্ব অর্পিত রয়েছে দুদকের হাতে। সেই দুদক উপর তলার দুর্নীতিবাজদের জামায় আদরে রেখে নিচের দুর্নীতি নিয়ে ব্যস্ত। মাছের পচন তার মাথা থেকে আসে। মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতি বন্ধ হলে দেশে দুর্নীতি কমবে। দুর্নীতি বন্ধে বক্তব্য আছে। কিন্তু এই দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে রাজধানীতে গণআন্দোলন নেই। নারী ধর্ষণ ও মাদক বিষয়ে সরকার ও প্রগতিবাদীরা যেভাবে রাস্তায় নেমে আসেন। শীর্ষ দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তাদের ভূমিকা দৃশ্যমান নেই। এই দুর্বৃত্তদের রুখতে হলে ক্ষুদা ও দরিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে এক কোটি তৎঊর্ধ্বের দুর্নীতিবাজদের ব্যাপারে অনতিবিলম্বে ফাঁসি বিধান দেশবাসী চায়।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি রোধে সংবিধানে থাকা ন্যায়পাল চালু ও তাদের বিষয়-সম্পত্তির হিসাব সরকারের নিকট দাখিলের বিধান বাধ্যতামূলক করতে পারলে অফিস-আদালতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে ইনশাআল্লাহ।
দ্রব্যমূল্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চাউল ও তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা প্রতিবেদনে বলেছে, ২০১৭ সালের অক্টোবরের পর দেশের প্রধান খাদ্য চাউল ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ভোজ্য তেলের মূল্য ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
প্রধানমন্ত্রী দেশের অনেক জরুরী বিষয় ও মেঘা উন্নয়ন প্রকল্প যে ভাবে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন, ঠিক একই ভাবে দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্য দ্রুত নিয়ন্ত্রণ দেখতে চায় দেশবাসী।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য মানবাধিকার কর্মী সৈয়দ আকরাম আল সাহানের পরিচালনায় বিক্ষাভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন রশীদ এডভোকেট, সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ অরুণ কুমার দেব, কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল মুতাওয়ালী ফলিক, কয়েছ আহমদ সাগর, আমিরুল হোসেন চৌধুরী আমনু, রফিকুল ইসলাম শিতাব, মুক্তাদির কিবরিয়া সিরাজী, যুব শ্রমিক নেতা আদনান খান হেলাল, সিলেট জেলা ন্যাপ ভাসানীর বিভাগীয় সদস্য সচিব কবি কামাল আহমদ, দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইসমত ইবনে ইসহাক সানজিদ, সিনিয়র সহ সভাপতি ইমাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আমীন তাহমিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম দিদার, সমাজসেবা সম্পাদক সৈয়দ নুর আহমদ জুনেদ, তাহরিনা চৌধুরী নিহা, এন.আই নজর, মোঃ আজহার আলী প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে ইকবাল হোসেন চৌধুরী সম্প্রতি প্রকাশিত দেশে দশ হাজার অবৈধ কোটিপতিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব নেয়ার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এক হাজার কোটিপতিদের বিরুদ্ধে দ্রুত দুর্নীতির মামলা দায়ের দাবী জানিয়ে বলেন, ক্ষুদা-দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাইলে শীর্ষ দুর্নীতিবাজ ও দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির পেছনের সিন্ডিকেটদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট এ্যাকশন দেখতে চায় দেশবাসী।
সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কামরান চত্বরের এসে সমাপ্ত হয়। বিজ্ঞপ্তি