সিলেট অঞ্চলে ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনা একটি ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। যা প্রায় প্রতি সপ্তাহের মধ্যে ঘটছে। এসব দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম নয়। এ ছাড়াও ট্রেন চলাচলে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদি ও যাত্রীবাহি ট্রেন গুলোতে যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে কিন্তু বার-বার দুর্ঘটনা ও ট্রেনের লাইন চ্যুতির ঘটনার কারণে সাধারণ যাত্রীবাহী ট্রেনের যাত্রী সংখ্যা হ্রাসের সম্ভাবনাই বেশী।
সম্প্রতি সিলেট অঞ্চলে ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনা বৃদ্ধি হওয়ায় জনমনে নানা সংশয় দেখা দিয়েছে। এটা কি কোনো সিলেট বিদ্বেষী মহলের কারসাজি, না হয় গত কয়েক মাসের মধ্যে এত ট্রেনের লাইনচ্যুতির কারণ কি? নতুবা রেল কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনার খেসারত দিতে হচ্ছে।
সিলেট-আখাউড়া রেল লাইনে গত কয়েক মাস থেকে অহরহ রেল লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের তেমন কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত না হওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো দুর্ঘটনার পর-পরই সংশ্লিষ্ট বিভাগের তদন্ত কমিটি গঠন করেই তাদের কর্তব্যে শেষ হয়ে যায়। তদন্ত কমিটির ফলাফল কেউ জানেন না। দুর্ঘটনার জন্যে দায়ীদের বিরুদ্ধে কি শাস্তির ব্যবস্থা হয়েছে, তা সাধারণ মানুষ জানার আগ্রহ থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
বিভিন্ন সূত্র মতে; সিলেট-আখাউড়া রেল লাইনে ট্রেন দুর্ঘটনার সিলেটবাসী সারাদেশের সাথে রেল যোগাযোগ থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়েছে। তথ্যমতে গত ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অসংখ্যক রেল দুর্ঘটনার কারণে সিলেট অঞ্চল ঘন্টার দিক দিয়ে শতাধিক ঘন্টার বেশী যোগাযোগে ব্যাঘাত ঘটে। এ সময়ের ক্ষতি ও দুর্ঘটনার যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এর দায়ভার নিবে কে?
সূত্র মতে; গত ২০১৯ সালের মে মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সিলেট-আখাউড়া রেল লাইনে রেল দুর্ঘটনার মধ্যে ১৬ মে ফেঞ্চুগঞ্জে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে। ২ জুন শায়েস্তাগঞ্জে কুশিয়ারা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার শিকার হয়। ১৯ জুলাই কুলাউড়ায় জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, ২০ জুলাই শায়েস্তাগঞ্জে কালনি এক্সপ্রেস, ১৬ আগষ্ট ও ৪ সেপ্টম্বর একই স্থানে উপবন, ১৭ সেপ্টেম্বর ফেঞ্চুগঞ্জে জালাবাদ এক্সপ্রেস, ৪ অক্টোবর বি-বাড়িয়ায় জালালাবাদ এক্সপ্রেস, ৭ নভেম্বর শ্রীমঙ্গলে সাতগাওয়ে রেল লাইনচ্যুতি, ১১ নভেম্বর কুলাউড়ার ভাটরায় মালবাহি ট্রেন লাইনচ্যুত, ৩০ নভেম্বর কুলাউড়ার বরমচালে একটি সারবাহি ট্রেনের লাইন চ্যুতি ঘটে, ২৯ ডিসেম্বর কুলাউড়ার বরমচালে মালবাহি ট্রেনের লাইনচ্যুতি হয়।
চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাওয়ে তেলবাহি ট্রেন লাইনচ্যুতি ঘটে, ১৩ ফেব্রুয়ারি কুলাউড়ার ভাটেরায় ট্রেন আবার লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে।
সিলেট অঞ্চলে ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নেয়া খুবই জরুরী বলে সচেতন মহল মনে করেন।