মহামারী করোনার মতো শব্দ দূষণও নীরব ঘাতক হিসেবে সর্বত্র বিরাজ করছে। শহর-শহরতলিতে শব্দদূষণ রোধে প্রায় অভিযান চালানো হলেও বাস্তবে কোনো প্রকার কাজের কাজ হচ্ছে না। ফলে প্রতিটি যানবাহনের বিকট হর্ণের দায়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে।
বর্তমানে প্রতিটি শহরে মাত্রাতিরিক্ত অবস্থায় লোকজন যেমন বাড়ছে, তেমনি চাহিদার চেয়ে নানা ধরনের যানবাহন ও বাড়ছে। মানুষের চাহিদার যোগান দিতে নতুন-নতুন যানবাহনের সংখ্যা বাড়ায় সর্বত্র শব্দ দূষণের মাত্রা ও বাড়ছে। ফলে শহরের আবাসিক-অনাবাসিক বাসা-বাড়ি, স্কুল-কলেজ, রাস্তার পার্শ্বে স্থাপিত হাসপাতাল, ক্লিনিক, হাট-বাজারের সাধারণ মানুষ ছাড়া ও পথচারিদের চলাচলে বিকট হর্ণের ধাক্কায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
চলতি পথে যানবাহনের বিকট শব্দ দূষণের কারণে বিরক্তিকর কারণ হয়ে পড়েছে, প্রাইভেট কার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গাড়ি, সিএনজি, মোটরসাইকেল সহ সর্বত্র চালিত বিভিন্ন যানবাহন কোনো জ্যামে পড়লে, অর্বাচীন চালকরা বিকট গণবিরোধী হর্ণ বাজিয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিসাধনের সাথে মানুষের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি ও আবাসিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহের সামনে বা এলাকায় হাইড্রোলিক হর্ণ বাজানো নিষিদ্ধ হলেও আমাদের দেশের অদক্ষ চালকরা যেখানে-সেখানে হাইড্রোলিক হর্ণ বাজিয়ে পরিবেশ দূষণ করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মোতাবেক ৩০টি কঠিন রোগের কারণ হচ্ছে ১২ রকমের পরিবেশন দূষণ। এসবের মধ্যে শব্দদূষণ অন্যতম। শব্দ দূষণের কারণে রক্তচাপবৃদ্ধি, হৃদস্পন্দনে পরিবর্তন, হৃদপিন্ডে ও মস্তিস্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যেতে পারে, এ জন্য শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, বমি-বমি ভাব, স্মৃতিশক্তি হ্রাসসহ বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতার শিকার হতে হয়। এ জন্য বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা শব্দের গ্রহণযোগ্য মাত্রা নির্ধারণ করেছে, শব্দের মাত্রা নির্ধারণের মধ্যে রাখতে বিভিন্ন দেশ আইন প্রয়োগ করেছে। কিন্তু আমাদের দেশে এ আইনের কোনো প্রয়োগ নেই বলে চলে।
মোটকথা, সম্প্রতি আমাদের দেশে শহর থেকে শুরু করে সারাদেশের গ্রামীণ এলাকায় শব্দদূষণের প্রবণতা মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রবণতা রোধে কঠোর ভাবে আইন প্রয়োগের কোনো বিকল্প নেই। আইন প্রয়োগকারিরা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তেমনি সাধারণ মানুষ অসুখ-বিসুখে ভুগবে। কেহ দায়ভার থেকে মুক্তি পাবেন না বলে সচেতনমহল মনে করেন।