শহীদ মিনারের মর্যাদা

14

যে কোনো জতীয় দিবসে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের নামে যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় তাতে শহীদদের শ্রদ্ধার নামে শহীদসহ শহীদ মিনারের মর্যাদা ক্ষুণœ করার সামিল। শহীদদের শ্রদ্ধাসহ শহীদ মিনারের মর্যাদা অক্ষুণœ রাখতে পরিচালনা কমিটি হিমশিম খেতে হয়। যা সভ্য সমাজে মোটেই কাম্য নয়।
আমাদের দেশে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু যতসব রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করে জনদাবি পূরণ করতে হয়েছে, তা শেষ এখনও শেষ হয়নি। বাঙালি জাতি তাঁর নিজের ভাষা বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্যে ১৯৫২ সালে বুকের তাজা রক্ত দিতে হয়েছে। বাঙালি জাতি স্বাধীনতার জন্যে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদের স্মরণে নির্ম্মিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সময়ে বিশৃঙ্খলা করা হয়। শহীদ মিনার পরিচালনা কমিটির কোনো শৃঙ্খলা কেহ মানতে চান না। যা‘ শহীদের প্রতি অবমাননার সমতুল্য।
যদি ও জাতীয় দিবস গুলোতে শহীদের স্মরণে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে গভীর নিরবতার সহিত শ্রদ্ধা নিবেদন করার রীতিনীতি দীর্ঘ কাল থেকে চলে আসলে ও বর্তমানে দেখা যায়, যতসব উচ্ছৃঙ্খলা, বিশৃঙ্খলা, হুলস্থুল, ধাক্কা-ধাক্কি, পেশিশক্তি প্রর্দশনের মধ্যে দিয়ে জুতা পায়ে শহীদ উটে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার প্রবণতা মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বৃদ্ধি পেযেছে। যা সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তোলেছে। এক সময়ে ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা দিবসের শহীদেরকে শ্রদ্ধা জানাতে খুব ভোরে খালি পায়ে প্রভাত ফেরির মাধ্যমে “আমার ভায়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি- আমি কি ভুলিতে পারি” এ গানটি সস্মিলিতভাবে গেয়ে-গেয়ে গভীর শ্রদ্ধার সাথে শহীদ মিনারে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদের আদর্শ বাস্তবায়নের দৃঢ় শপথ নিয়ে শহীদ মিনার ত্যাগ করা হতো।
এছাড়া ও বাঙালি জাতির মহান স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, জাতীয় শোক দিবস গুলো যথাযোগ্য মর্যাদায় সুশৃঙ্খল ভাবে পালিত হয়ে আসলে ও ৮০ দশকের পর থেকে রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের সময়ে প্রথমত; শহীদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটি ও প্রশাসনের পুষ্প স্তবক অর্পণের পরই যে অবস্থা বিরাজ করে, কোনো প্রকার শৃঙ্খলা বলতে কিছুই থাকে না। এ সময় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক প্রদান করতে আগতরা নাস্তানাবোদের শিকার হতে হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণের সময়ে যতসব অসৌজন্যমূলক আচরণ, হাঙ্গামা, ধস্তাধস্তি মারামারি সিনিয়র-জিনিয়রটির কোনো ভেদাভেদ থাকে না। শহীদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটি ছাড়া ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনির লোকজন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হিমশিম খেতে হয়।
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে; সকল প্রকার বিশৃঙ্খলতা পরিহার করে শহীদের মর্যাদা রক্ষায় শ্রদ্ধা নিবেদনকারিরা সুশৃঙ্খল, ধৈর্য, সহনশীলতার মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা খুবই উত্তম। আমাদেরকে শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় মানবিক ভাবে চিন্তা করতে হবে। মনে রাখতে হবে এখনও শহীদ মিনার বিরোধী চক্র সক্রিয়, তারা শহীদ মিনার নিয়ে কম ষড়যন্ত্র করেনি। তাই জাতীয়ভাবে শহীদ মিনারের মর্যাদা হরণকারিদেরকে কঠোর ভাবে দমন করার বিকল্প নেই।