কাজিরবাজার ডেস্ক :
সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও দেশপ্রেম নিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালনের আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার নির্দেশনা “জীবনে বড় কথা-সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা এবং দেশমাতৃকাকে ভালোবাসা। এই উপদেশ চলার পথে সব সময় মনে রাখবা”।’
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০২০ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে এ কথা বলেন।
সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, ‘তোমরা দেশকে ভালোবাসবে, মানুষকে ভালোবাসবে, মানুষের জন্য কর্তব্য পালন করবে। যেন এই দেশ এগিয়ে যেতে পারে। ভবিষ্যতে এই দেশ যেন আরও উন্নত, সমৃদ্ধ হতে পারে সেইভাবেই তোমরা কাজ করবে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে এ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। সে কথা মনে রেখে সবাইকে দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।’
অনুষ্ঠানে ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে পার্সিং আউট ক্যাডেটদের উদ্দেশে জাতির পিতার দেওয়া ভাষণের উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘“আমি তোমাদের জাতির পিতা হিসাবে আদেশ দিচ্ছি, তোমরা সৎ পথে থেকো, মাতৃভূমিকে ভালোবাইসো। ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াবা, গুরুজনকে মেনো, সৎ পথে থেকো, শৃঙ্খলা রেখো, তা হলে জীবনে মানুষ হতে পারবা”।’
প্রধানমন্ত্রী মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুসহ ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে প্রাণ হারানো জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লেফট্যানেন্ট শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেলের কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে ছোট ভাই রাসেলের বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। তার জীবনে একটাই স্বপ্ন ছিল যে, সে সেনাবাহিনীর অফিসার হবে। তাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করায় সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি।’
সেনাবাহিনীর নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন তোমাদের মাঝে আসি, আমার মনে হয় আমিও তোমাদের পরিবারেরই একজন। কাজেই তোমাদের প্রতি সব সময় আমার দোয়া থাকবে, আশীর্বাদ থাকবে। তোমরা দেশ সেবা করবে। দেশের মানুষদের জন্য কাজ করবে।’
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে সশরীরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারায় দুঃখও প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন তিনি। সেনাবাহিনীতে কর্তব্যরতদের দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘দেশে-বিদেশে আমাদের সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাই সর্বক্ষেত্রে তারা দক্ষ থাকবে, উপযুক্ত থাকবে, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হবে; যেন সারাবিশ্বের যেখানেই যাবে সেখানেই তারা দেশের সম্মান অক্ষুণ্ন রাখতে পারে। এদিকে সজাগ থাকতে হবে।’
বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি ভাটিয়ারিতে অনুষ্ঠিত বিএমএ ৭৯তম দীর্ঘ মেয়াদি কোর্সে ১১৬ জন বাংলাদেশি, ৩ জন ফিলিস্তিনি এবং একজন শ্রীলঙ্কান ক্যাডেটসহ মোট ১২০ জন ক্যাডেট কমিশন লাভ করে। ক্যাডেটদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কার তুলে দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।