শাহ আলম শামীম, কুলাউড়া থেকে :
কুলাউড়া উপজেলার ঝিমাই চা বাগান ও পানপুঞ্জিবাসীর মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘ বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি বরং নিয়েছে নতুন মোড়। গতকাল ১৮ এপ্রিল শনিবার থেকে ঝিমাই চা বাগান কর্তৃপক্ষ সকল রাস্তা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এতে ৬টি পানপুঞ্জির ৩শ খাসিয়া পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন ঝিমাই চা বাগান এলাকায় গেলে বাগানের প্রবেশ গেটে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা পথরুদ্ধ করে। সাংবাদিক পরিচয়ে ভেতরে যেতে দেয়। ঝিমাই পানপুঞ্জির খাসিয়াদের মধ্যে বিরাজ করছে আতংক। পুঞ্জিমন্ত্রী (হেডম্যান) রানা সুরং জানান, পানপুঞ্জির লোকজন হামলা ও উচ্ছেদ আতংকে রয়েছে। শনিবার সকাল থেকে বাগান কর্তৃপক্ষ রাস্তায় গেইট বন্ধ করে দিয়ে ৮-১০ জন সন্ত্রাসী নিযুক্ত করে রেখেছে। ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা সকালে রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে দেয়নি। পানপুঞ্জির ছাত্রছাত্রীরা স্কুল কলেজে যেতে পারেনি। বাইরের কোন লোককে অর্থাৎ দিনমজুরকে পানপুঞ্জিতে কাজ করতে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। তাছাড়া পানপুঞ্জির বিকল্প প্রবেশপথ রেহেনা চা বাগান ও গুজাছড়া রাস্তায় বাগানের ভাড়াটিয়া লোকজন বসানো হয়েছে। এরফলে ঝিমাই পানপুঞ্জি, ভালাইমা পানপুঞ্জি, কালাপাহাড় (নতুন চৈলতা) পানপুঞ্জি, আমুলী পানপুঞ্জি এবং চৈলতাছড়া পানপুঞ্জিসহ ৬টি পানপুঞ্জির ৩শ খাসিয়া পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
ঝিমাই পানপুঞ্জিতে কাজ করতে আসা দিনমজুর মালু মিয়া (৩৮) ও আলিম মিয়া (৪৫) জানান, তারা প্রতিদিন সকালে পানপুঞ্জিতে কাজ করতে আসেন। সকালে আসার সময় বাগানের গেইটে তাদের আটকানো হয়। পুঞ্জিতে কাজ করার কথা বললে তাদের ফেরৎ চলে যেতে বলা হয়। পরে তারা চা বাগানের ভেতর দিয়ে লুকিয়ে বেলা দেড়টায় পানপুঞ্জিতে আসেন। কাজ শেষে ফিরতে হবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
ঝিমাই চা বাগানের ম্যানেজার জাকির হোসেন জানান, তারা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অমান্য করেছে। বাগানের বন্দোবস্তকৃত ৬৮৬ একর ভূমির মধ্যে ৩৭১ একর জমি খাসিয়াদের দখলে। বাগান কর্তৃপক্ষ ২০১২ সাল থেকে ২০৫২ সাল পর্যন্ত বন্দোবস্ত নিয়েছে। আর ভুমি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে খাসিয়ারা প্রথমে রাজি হলেও পরে তা প্রত্যাখ্যান করে। ফলে তাদের রাস্তা বন্ধ করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।