টাঙ্গুয়ার হাওরের গাছ প্রকাশ্যে কেটে নিচ্ছে স্থানীয় চোর চক্র

11
তাহিরপুর টাঙ্গুয়ার হাওরের হিজল বাগান।

তাহিরপুর থেকে সংবাদদাতা :
প্রকাশ্যে টাঙ্গুয়া হাওরে পলিয়ার বিলে হিজল গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে চোর চক্র। বিশাল হাওরে অনেক স্থান জন শূন্য থাকায় দিনেই চোর চক্র সাবার করছে গাছ। স্থানীয়রা জানান চোর চক্র গাছের ডালপালা বিক্রি করছে ডোবা কিংবা বিল জলাশয়ের মালিকদের কাছে।
জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নে অবস্থান রামসার দ্বিতীয় সাইট টাঙ্গুয়া হাওর। টাঙ্গুায়া হাওরে যেমন জলজ প্রাণী রয়েছে তেমনি রয়েছে জলজ উদ্ভিদ। জলজ উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে করছ, বরুন, হিজল। হাওরে দৃষ্টি নন্দন বাড়িয়েছে একাধিক হিজল করছ বাগান। ফলে দৃষ্টি নন্দন হিজল, করছ বাগান মন কেড়েছে পর্যটকদের। বছরের অধিকাংশ সময় জুড়েই র্পটকদের আনাগুনা টাঙ্গুয়া হাওরে। হাওরের চতুরপাশে রয়েছে একাধিক হিজল করছ বাগান। এর মধ্যে হিজল গাছের বড় বাগানটি হাওরের উত্তর দিকে মইয়াজুড়ি ও মুজরাই গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে। সম্প্রতি হাওর ঘুরতে গিয়ে স্থানীয় লোকজন ও একাধিক পর্যটকের চোখে পড়ে নির্বিচারে হিজল গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার চিত্র। স্থানীয়রা জানান, হিজল গাছের ডাল পালা হাওরের বিল জলাশয় ও ডোবা নালায় ব্যবাহার করা হয় মাছের আশ্রমের জন্য। পানিতে থাকা অবস্থায় গাছের ডাল পালায় প্রচুর শ্যাওলা জমে। শ্যাওলা মাছের খাদ্যের অংশ হিসেবে বিল জলাশয়ের মালিকরা বিলে হিজল গাছের ডাল পালা ব্যবহার করেন। চোর চক্ররা অনেক সময় নিজেদের জলাশয় ডোবায় এ গাছ ব্যবহার করেন অনেক ক্ষেত্রে গাছের ডাল পালা অন্যত্র বিক্রি করে দেন। এবং গাছে মূল জ¦ালানী হিসেবে ব্যবহার করেন। বছরের বিভিন্ন সময় হাওরের গাছ কেটে নেয়া হলেও সম্প্রতি একটু বেপরোয়া হয়ে পড়ছে হাওরের গাছ চোর চক্র। হিজল বনের বিভন্ন প্রান্তে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০টি গাছ কেটে নিয়ে যায় চোর চক্র। এখনই তাদের আইনের আওতায় না আনা গেলে চোখের সামনেই উজাড় হবে হাওরে দৃষ্টি নন্দন হিজল করচ বন। এমনটাই আশংকা প্রকাশ করছেন হাওরে ঘুরতে আসা পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন।
উপজেলার রতনশ্রী গ্রামের শিবলি মিয়া, তিনি টাঙ্গুয়া হাওরে পর্যটকদের নিয়ে প্রায়ই যাতায়াত করেন। গত শনিবার ২১ নভেম্বর ১০ /১৫ জন পর্যটকদের টাঙ্গুয়া হাওরে হিজল বন দেখাতে নিয়ে যান সে সময় বনের ভেতর বেশ কয়েকটি গাছ কাটা দেখতে পান।
ট্রাভেলার সাদেকুর রহমান বাবলু, মিত্রা সাহা সহ একাধিক ট্রাভেলারর জানান, টাঙ্গুয়া হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটা বড় অংশ হিজল, করচ বন। এ বন না থাকলে হাওরে পর্যটক আসবে না।
টাঙ্গুয়া হাওর পার মন্দিয়াতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সানজু মিয়া জানান, তিনি টাঙ্গুয়ার হাওরের পলিয়ার বিলে ঘুরতে গিয়ে একাধিক হিজল গাছ কাটা দেখতে পান তার পর তিনি বিষয়টি সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। যারা হাওরের গাছ কাটার সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।