বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশী নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যু ঘটনার তদন্তের ধীর গতি ও প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর নিখোঁজ নিয়ে হতাশা বাড়ছে। নির্যাতনকারীদের গ্রেফতার নিয়ে নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, দুজন দুজন করে গ্রেফতার করে সারা বছর পার হয়ে যাবে। তদন্তে ধীর গতি নিয়েও অসন্তেুাষ রয়েছে তাদের। অসন্তোষ রয়েছে সচেতন মহলে। অভিযুক্ত এসআই আকবরকে গ্রেফতারে বিলম্ব হওয়ার বিষয় নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যেভাবে আকবরকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করা হয়েছে, ঠিক একইভাবে তাকে পালিয়ে থাকতে সহযোগিতা করা হচ্ছে কিনা সে বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে।
ঘটনার ষোলো দিনেও জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। নির্যাতনের ঘটনার পর ফাঁড়ির সিসি ক্যামেরার হার্ডডিক্স পরিবর্তনে জড়িত এক সংবাদকর্মীসহ অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ কিংবা গ্রেফতার করা হয়নি। ঘটনার সময় রায়হানকে ছিনতাইকারী হিসেবে চিহ্নিত করে পুলিশের কাছে অভিযোগকারী সাইদুর রহমানকে গত রবিবার সন্দিগ্ধ হিসেবে আটক করা হয়। পরে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সাইদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে সচেতন মহল মনে করছে। শুরুতে নগরীর কাষ্টঘর এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা উল্লেখ করে অভিযুক্ত পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে অন্যভাবে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেখানে সেদিন ছিনতাইয়ের কোন ঘটনার আলামত পাওয়া যায়নি। এলাকাটি সিসিটিভির আওতায় থাকায় স্থানীয় কাউন্সিলরের কার্যালয়ে রক্ষিত ফুটেজ থেকে ছিনতাই কিংবা কোন মারধরের ঘটনার প্রমাণ যাওয়া যায়নি। পরে তদন্তে বিষয়টি সাজানো বলে তথ্য বেরিয়ে আসে।
রায়হান নিহতের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এর মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য। তারা হচ্ছেন- কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও টিটু চন্দ্র দাস। এর মধ্যে হারুন ৫ দিনের রিমান্ডে আছেন এবং টিটুকে দ্বিতীয় দফায় তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে আরেক অভিযুক্ত হলেন এএসআই আশেকে এলাহী। তাকে গত ১৩ অক্টোবর দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে যুক্ত করা হয়। ঘটনার দিন ফাঁড়িতে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যদের জবানবন্দী থেকে অনেক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। (খবর সংবাদদাতার)