স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা গ্রেফতারকৃত মো: হারিছ আলীকে গ্রেফতার করেছে সিলেটে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সদস্যরা। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে দক্ষিণ সুরমার অতিরবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়ান’র একটি দল। আটকের সময় তার কাছ থেকে ১৯৯ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করে বিজিবি।
এ ব্যাপারে বিজিবি’র হাবিলদার আওয়াল হোসেন বাদি হয়ে তার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-২০ (২৩-১০-২০২০)। বিষয়টি নিশ্চিত করে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, গতকাল শনিবার মামলা হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী গ্রেফতারকৃত হারিছ আলীকে পুলিশ আদালতে প্রেরণ করেছে। এর পর আদালতে তার শর্ত সাপেক্ষে জামিনে হওয়ার কথা শুনেছি বলে জানান এই কর্মকর্তা।
দক্ষিণ সুরমা থানার জিআরও এসআই ঝানু মিয়ার সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আইন শৃংঙ্খলার কথা চিন্তা করে আদালত তাকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছেন। আর মামলা মামলার গতিতে চলবে বলে জানান তিনি।
গতকাল রাতে দক্ষিণ সুরমা থানার ডিউটি অফিসার বকুল আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শ্রমিক নেতা হারিছ আলীর বিরুদ্ধে মাদকের মামলা হয়েছে। তবে শ্রমিক নেতা হওয়ায় রাস্তা বন্ধ করার কারণে আসামী হারিছ আলীকে তাৎক্ষণিক আইন শৃংঙ্খলার কথা চিন্তা করে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে আদালত তাকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছেন।
এদিকে, হারিছ আলীকে গ্রেফতারের পর নগরীর আখালিয়া বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে গেলে গত শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। তারা ভোররাত পর্যন্ত দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে লালাবাজার পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন এবং বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বেলে বিক্ষোভ করেন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। অবরোধের কারণে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কসহ আশপাশের সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে এবং সড়কগুলোতে দেখা দেয় তীব্র যানজট। এ যানজট কদমতলি বাস টার্মিনাল থেকে নগরীর শাহজালাল উপশহর পর্যন্তও দীর্ঘ হয়। পরে রাত ৪টার দিকে হারিছ আলীকে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি। এসময় পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেন পরিবহন শ্রমিকরা।
অপরদিকে বিজিবির দাবি হারিছ আলীর কাছ থেকে ১৯৯ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। বিজিবি-১৯ ব্যাটালিয়ন এর কমান্ডার লে. কর্নেল মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি ওই ব্যক্তির কাছে ইয়াবা আছে। তাৎক্ষণিক আমি একদল ফোর্স পাঠালে দক্ষিণ সুরমার অতিরবাড়ি এলাকায় গিয়ে তার মোটরসাইকেল পাওয়া যায়। তখন তাকে ডেকে এনে শরীর তল্লাশি করে ইয়াবার একটি পুটলা পাওয়া যায়। এই পুটলায় ১৯৯ পিস ইয়াবা ছিলো। পরে তাকে মোটরসাইকেলসহ আমার ফোর্স নিয়ে আসে। এরপর রাতে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে গেটে কারা আমার সাথে দেখা করতে এসেছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে আমি কাউকে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেইনি। পরে আটক হারিছ আলীকে রাত ৪টার দিকে দক্ষিণ সুরমা থানায় হস্তান্তর করা হয়।