স্টাফ রিপোর্টার :
আপন ভাইদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দীর্ঘদিন ধরে তাঁর ভূমির একটি অংশ দখল চেষ্টার অভিযোগ করেছেন দক্ষিণ সুরমার পাঠান পাড়া এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. গুলজার খাঁন। মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্য কুয়েতে অবস্থানকালে নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে আমার মায়ের নামে ৫০ শতক ভূমি ক্রয় করি। পরবর্তীতে মা ২০০৮ সালে আমি দেশে আসার পর আমাকে ৫০ শতক ভূমি দানপত্রের মাধ্যমে হস্তান্তর করেন। দলিল সম্পাদনের সময় সাক্ষী হিসেবে ছিলেন আমার ভাই ইফতেজার খান ও গুলফুর খানের ছেলে আমার ভাতিজা মো. জাবেদ খান। বর্তমান জরিপি সময়ে আমার নামে প্রিন্ট খতিয়ানও হয়। এই ভূমির মালিকানা আমার নামে থাকলেও আমার অপর দুই ভাই তোফাজ্জল খান ও কাহির খান জোরপূর্বক দীর্ঘদিন ধরে ভূমির একটি অংশ দখল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। আমার অপর ভাই মো. গুলফুর খান ও ইফতেজার খান আমার সাথে বসবাস করলেও তোফাজ্জল খান ও কাহির খান সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে সমাজ ও আইনের চোখে অপরাধী বানানোর হীন চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ প্রচার করিয়েছে।
মায়ের অসুস্থতাকালীন সময়ে দলিলে স্বাক্ষর নিয়ে ৫০ শতক ভূমি নিজের নামে রেজিষ্ট্রি করার অভিযোগ মিথ্যা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ১৯৭১ সালে মাতৃভূমি বাংলার জন্য হাতে তুলে নিয়েছিলাম অস্ত্র। আমি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে আসছি। আমার ৪ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তান রয়েছে। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বর্তমানে আমি বসতবাড়িতে থাকতে পারছিনা। তোফাজ্জল খান ও কাহির খান আমার ও আমার অপর ২ ভাইদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আসছেন।’
গুলজার খাঁন বলেন, সংবাদ সম্মেলনে তারা ছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিলেট মহানগর শাখার ২৭ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. ছয়েফ খানের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক মিথ্যা অভিযোগের তথ্য দিয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অপপ্রচার। আমার অবস্থা বিবেচনা করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ছয়েফ খানকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তোফাজ্জল খান ও কাহির খান।
তোফাজ্জল খান এলাকায় একজন উগ্র মেজাজি ও পরধনলোভী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত জানিয়ে তিনি বলেন, তোফাজ্জল খান দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্য অবস্থান করেছিলেন। সেখানে সে তার স্ত্রীর উপর অমানুষিক শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করলে স্ত্রী বাধ্য হয়ে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ব্রিটিশ সরকার তোফাজ্জল খানকে আটকের পর ২ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন। ২ বছর পর তার পাসপোর্ট বাতিল করে দেশে পাঠিয়ে দেয়। দেশে এসে সে আরো বেপরোয় হয়ে পড়লে আজ থেকে ৪ বছর আগে মোগলাবাজার থানা পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে মুছলেখা দিয়ে বের হয়ে আসে। সে ও কাহির খান সম্মিলিতভাবে আমাকে নাজেহাল করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আমি নিরাপত্তার স্বার্থে তোফাজ্জল খান ও কাহির খানের বিরুদ্ধে মোগলাবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। এ ছাড়া আমার ভাতিজা জাবেদ খান, আমার আরেক ভাই ইফতেজার খান ও ভগ্নিপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী কুতুব আলী তোফাজ্জল খানের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী করেন।
তোফাজ্জল খান ও কাহির খান তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা যেকোনো সময় আমার পরিবার ও আমার অপর ভাইদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে বলে আশংকা করছি। আমি বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি।’
নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তায় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন মুক্তিযোদ্ধা মো. গুলজার খাঁন।