মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
অনুকূল আবহাওয়া, রোগবালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ না থাকায় চলতি মৌসুমে মৌলভীবাজার জেলায় রোপা আমন ধান বেশি চাষ করায় বাম্পার ফলনের আকাক্সক্ষা করছেন কৃষকরা। তবে কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্টরা রোপা আমনের ফলন রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা মনে করছেন।
শ্রীমঙ্গল হাইল হাওরের বাসিন্দা তাহির মিয়া বলেন,‘ ৫ কেয়ার জমিতে রোপা আমন চাষ করেছি। এবার ফলন ভাল হবে বলে আশংকা করছি।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলার শহরতলীর ইছুবপুর এলাকার কৃষক জুবায়ের ও মনির মিয়া জানান, আশ্বিন-ভাদ্র মাসে প্রায় ৪/৫ জাতের ধান করেছি। আমাদের পরিবার পুরোপুরিভাবে কৃষি নির্ভর। আমাদের প্রায় ২০০ কেয়ার ধানি জমি রয়েছে। এখানে এসব জমিতে রোপণ হয়েছে বিআর এগারো ধান, বীনা ধান বিশ, বিআর তেইশ ধান, চিকন স্বর্ণা, গুটি স্বর্ণা, চিনিগুঁড়া চাল এবং দেশি বিরুইন (বিন্নি) ধান। পুরো জমিতেই ধান লাগানো হয়েছে। এক তোলাও ফাকা নেই। এই ৪-৫ জাতের ধান রোপণের মানে হলো- দু-একটায় যদি ফসল কম দেয়, তাহলে অন্যটা দিয়ে কাভার দেওয়া যাবে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলার সদর উপজেলায় ১৮ হাজার ১৬০ হেক্টর, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ১৫ হাজার ৫৬৫ হেক্টর, রাজনগর উপজেলায় ১৩ হাজার ১০৫ হেক্টর, কমলগঞ্জ উপজেলায় ১৭ হাজার ২৯৫ হেক্টর, কুলাউড়া উপজেলায় ২০ হাজার ১৯০ হেক্টর, বড়লেখা উপজেলায় ৮ হাজার ৬৭০ হেক্টর এবং জুড়ি উপজেলাতে ৮ হাজার ৪৫০ হেক্টরসহ মোট ১ লাখ ১৪৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ হয়েছে।
গত বছর ২০১৯ সালে মৌলভীবাজার জেলায় ১ লাখ ১৫০ হেক্টর জমিতে এই ফসল উৎপাদন হয়েছিল।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, মৌলভীবাজার জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লক্ষ ১৪৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ২০০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ২৮০ হেক্টর বেশি হয়েছে। এবার বেশির ভাগই রোপণ হয়েছে হাওর এলাকায়। যেখানে এর আগে কোন সময় আমন চাষ হতো না। সেখানে বোরো ধানই হতো। এবার পাম্পের মাধ্যমে হাওর-জলাশয়ের পানি নিষ্কাশন করায় এখানে ধানের আবাদ বেড়ে গেছে। আমরা রোপা আমনের উৎপাদন রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।