মৌলভীবাজারে বন্যার পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, যুবক নিখোঁজ

2

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা

ধলাই নদী ছাড়া সবগুলো প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও মৌলভীবাজারে কমতে শুরু করেছে পানি। উপরিভাগে বন্যার কিছুটা উন্নতি হলেও নিম্নাঞ্চল রাজনগর উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকার ঘর-বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনও পানিতে নিমজ্জিত।
এদিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ময়নার দোকান নামক স্থানে মাছ ধরতে এসে পানিতে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন হৃদয় মিয়া (২২) নামে এক যুবক। উজানের ঢলের পানি ও টানা বর্ষণে মৌলভীবাজার জেলার সদর, রাজনগর, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও জুড়ীসহ অন্যান্য উপজেলার ৭২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েন। মনু নদীর ছয়টি স্থানে ও ধলাই নদীর চারটি স্থানে বন্যাপ্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে বেশি আক্রান্ত হয় রাজনগর, কুলাউড়া ও কমলগঞ্জের কয়েকটি ইউনিয়ন। বন্যা আক্রান্ত মানুষকে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সেনাবাহিনী বোর্ডসহ উদ্ধার ও বিভিন্ন রকম সহযোগিতা করছে। ২২ আগস্ট মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও ওইদিন রাত থেকে কিছু যানবাহন চলাচল শুরু করেছে।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুপ্রভাত চাকমা জানান, উপজেলা সদর এখনও পানিতে নিমজ্জিত থাকলেও পানি কমতে শুরু করেছে। তবে কাউয়াদীঘি হাওরপাড়ের পাঁচগাঁও, ফতেপুর ও উত্তরবাগ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। কুলাউড়ার টিলাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জানান বাড়ি-ঘর থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।
এদিকে, মৌলভীবাজারের রাজনগরে বন্যার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে সাদিক হোসেন হৃদয় (১৯) নামের এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। ঘটনার ১২ ঘণ্টা পার হলেও তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকালে বিষয়টি রাজনগর ফায়ার স্টেশনে জানালে সিলেট থেকে ডুবুরি দল এসে চেষ্টা করেও তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে বানের পানিতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে এমন খবরে জেলার রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের মেদেনীমহল গ্রামের শৌখিন মাছ শিকারির সাথে হৃদয় বন্যাকবলিত রাজনগর সদর ইউনিয়নের ময়নার দোকান নামকস্থানে মাছ ধরতে যান। পরে ওই স্থানে মাছ ধরা শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত অবস্থান করেন। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে হৃদয় চিটকা জাল ছুড়লে জালের টানে পানিতে ভেসে যান। পরে তাকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করা হলেও কিন্তু পানিতে স্রোত বেশি থাকায় তা করতে পারেননি স্থানীয়রা।
খালাতো ভাই আলমগীর হোসেন বলেন, শৌখিন মাছ শিকারি আমার খালাতো ভাই হৃদয়ের এই ঘটনায় তার বাবা-মা ও নিকট আত্মীয়রা মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পড়েছেন।
রাজনগর ফায়ার স্টেশন ইনচার্জ আলী হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এখানে পানির প্রবল স্রোত রয়েছে। আমাদের ডুবুরি দল অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু ওই স্থানে তাকে জীবিত বা মৃত কোনো অবস্থায় পাওয়া যায়নি।