সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ অপহরণের পর হত্যা চেষ্টার অভিযোগ কলেজ ছাত্রের

14
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন সদর উপজেলার হাটখোলা ইউনিয়নের বড়ফৌদ গ্রামের বাসিন্দা নজির আহমদ মোজাহিদ।

স্টাফ রিপোর্টার :
দুষ্কৃতিকারীরা অপহরণ করে হত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট সদর উপজেলার হাটখোলা ইউনিয়নের বড়ফৌদ গ্রামের মো. ফয়জুল হকের ছেলে এবং এমসি কলেজে বিএসএস পাস কোর্সের ছাত্র নজির আহমদ মোজাহিদ। বুধবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে মোজাহিদ বলেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ১০টার দিকে বড়ফৌদ পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের মক্তবঘর এলাকায় সালিশের কথা বলে এলাকার রাজা মিয়াকে দিয়ে আমাকে ডেকে নেওয়া হয়। পরিকল্পিত সালিশে উপস্থিত ছিলেন এলাকার রফিকুল ইসলাম মড়ল (৪০), আফতাব উদ্দিন (৪২), আব্দুর রহিম বাবু (৫০), বশির (৫৫), সুরুজ আলী (৫৭), সুবহান (৬০), সুনান (৫০), ইছমত (৫৫), খালিক (৫৫), মুহিবুর রহমান (৪০), আনিছুর রহমান আয়নিছ (৪৫), আয়নুল হক (৫৫), নুর মিয়া (৬০), সুরুজ আলী (৫৫), রাজা মিয়া (৫৫), সিরাই (৪৫)। সবাই সালিশের নামে অস্ত্রহাতে বসেছিল বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, সেখানে যাওয়ার পরপরই আমাকে ঘেরাও করে অপহরণ করা হয়। সবাই মিলে আমাকে মারধর করে গ্রাম পার করে হাওর এলাকায় নিয়ে যায়। এরপর হত্যার জন্য মুহিব, আয়নিছ, খালিক নামে ৩ জনের হাতে তুলে দেয়। তারা হাওরের মাঝখান দিয়ে কমপক্ষে ২ কিলোমিটার জায়গা আমাকে হাঁটিয়ে রাত ১১ টার দিকে স্থানীয় চেঙেরখালের শাখা ভাদেশ্বর নদীর তীরে নিয়ে যায়। তাদের সঙ্গে ছুরি ও বস্তা ছিল।
সেখান থেকে বেঁচে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা যখন হত্যার প্রস্তুতি নিচ্ছিল আমি লাফ দিয়ে নদীতে পড়ে যাই। আমাকে ধরতে তারাও নদীতে পড়ে কিন্তু সাঁতার কেটে আমার সঙ্গে পেরে ওঠেনি। আমি নদী পার হয়ে ইউনিয়নের দখড়ি গ্রামে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাইদুর রহমানের বাড়িতে আশ্রয় নেই। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, তার ভাই পুলিশকে ঘটনাটি জানালে শিবেরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ রাজা মিয়াকে আটক করে। রাজা মিয়া পুলিশকে অপহরণের বিষয়ে তথ্য দিলেও তাকে আটক না রেখে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বর শিবেরবাজার ফাঁড়িতে বিষয়টি ফোন দিয়ে জানালে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এরপর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসার পর অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করলেও এক পুলিশ সদস্য এজাহার লিখে দেন যেখানে আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অনেক কিছুর উল্লেখ নেই। এজাহারে মূল ঘটনাকে তিনি ভিন্নখাতে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন মোজাহিদ।
গ্রামের একটি বিষয়ে তার ছোট ভাই বশির আহমদ একটি মিথ্যা সাক্ষী না দেওয়া এবং শিবেরবাজারের পাশের গ্রাম দীঘিরপারের আতাউর রহমানের আর্থিক লেনদেন নিয়ে এমন ঘটনার সূত্রপাত বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।
তিনি বলেন, পরিকল্পিত সালিশের নামে আমাকে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টা করা হয়। মূলত, ইউনিয়নে আতাউরের সঙ্গে লেনদেনের বিচার থেকে শুরু করে সালিশে থাকা লোকজনের সঙ্গে আতাউর, রাজা মিয়াও অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার ঘটনায় জড়িত ছিল।
তিনি বলেন, জীবন বাঁচাতে আমি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এলাকায় যেতে পারছি না, যদি ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়, সেই ভীতি থেকে ওরা আমাকে হত্যা চেষ্টায় হণ্যে হয়ে ঘুরছে। এমন অবস্থায় তিনি প্রশাসনের মাধ্যমে আইনি সহায়তা কমনা করেন।