কাজিরবাজার ডেস্ক :
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্যখাতে কর্মরত ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০ জনের সম্পদের হিসাব তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য এই তথ্য জানিয়েছেন।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের স্ত্রীর সম্পদেরও হিসাব জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।
প্রণব কুমার জানান, পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের স্বাক্ষরিত নোটিশটি গত ১৫ সেপ্টেম্বর পাঠানো হয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪’ এর ধারা ২৬ এর উপ-ধারা (১) দ্বারা অর্পিত ক্ষমতাবলে তাদের নিজের এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের স্বনামে/বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী এই আদেশ প্রাপ্তির ২১ কার্যদিবসের মধ্যে নির্ধারিত ছকে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হলো। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদের বিবরণী দাখিল করতে ব্যর্থ হলে, অথবা মিথ্যা বিবরণী দাখিল করলে দুদক আইনের ২৬ (২) উপধারায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যেসব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে সম্পদের বিবরণী ইস্যু করা হয়েছে তারা হলেন- অধিদপ্তরের ইপিআই বিভাগের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. মজিবুল হক মুন্সি, তার স্ত্রী মিসেস রিফাত আক্তার; ইপিআই বিভাগের ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটর তোফায়েল আহমেদ ভূইয়া, তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার; গাড়িচালক মো. আব্দুল মালেক, তার স্ত্রী নার্গিস বেগম; গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ওবাইদুর রহমান, তার স্ত্রী বিলকিচ রহমান; ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের স্টাফ নার্স রেহেনা আক্তার, রংপুর মেডিক্যাল কলেজের হিসাব রক্ষক ইমদাদুল হক, তার স্ত্রী উম্মে রুমান ফেন্সী; জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাহমুদুজ্জামান, তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিন; গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্টোর অফিসার মো. নাজিম উদ্দিন, তার স্ত্রী ফিরোজা বেগম; স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অফিস সহকারী (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) কামরুল হাসান, তার স্ত্রী ডা. উম্মে হাবিবা, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজের স্টেনোগ্রাফার কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. সাইফুল ইসলাম।
এছাড়াও সাবেক সহকারী প্রধান (নন মেডিক্যাল) বর্তমানে সহকারী প্রধান পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর কার্যালয়, বরিশাল বিভাগ মীর রায়হান আলী; রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিসাব রক্ষক মো. আনোয়ার হোসেনের সম্পদের হিসেবে চেয়েছে দুদক।
করোনার প্রকোপ শুরুর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে তলব করে দুদক। এছাড়াও বিভিন্ন সময় সংস্থাটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ উপার্জনের অভিযোগ আছে। সবশেষ সাবেক মহাপরিচালকের গাড়ি চালক আব্দুল মালেককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গাড়িচালক পদে কর্মরত হলেও র্যাবের অনুসন্ধানে তার ঢাকায় একাধিক বাড়িসহ ২৪টি ফ্ল্যাট, একাধিক গাড়ি ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের সন্ধান পাওয়া গেছে।
এছাড়াও কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মচারী আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধেও অবৈধ উপায়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পায় দুদক। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।