স্পোর্টস ডেস্ক :
কেউ বলছেন, অবাক করার মতো ফলাফল। কেউ বলছেন, ঐতিহাসিক রেজাল্ট। আবার কারও মতে, এটাই তো হওয়ার ছিল। শুক্রবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের দাপট দেখে এমনটাই বলছেন ফুটবল-বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে বার্সেলোনাকে ৮-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ।
মেসির চোখ ঝলসানো স্কিল নিয়ে লিখতে গেলে কত কালি খরচ হয়, তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু জার্মান-ধাঁধার সমাধান করা সম্ভব হয়নি তাঁদের পক্ষে।
১০ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার রিমোট কন্ট্রোল ছিল দিয়েগো ম্যারাডোনার হাতে। ‘এল দিয়েগো’র দল সেবারের বিশ্বকাপে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলছিল। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে নীল-সাদা জার্সিধারীরা বিবর্ণ হয়ে যান। ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকে ম্যারাডোনা পর্যন্ত জার্মানদের বিরুদ্ধে মনস্তাত্বিক যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছিলেন। জার্মানির মাঝমাঠের প্রাণভোমরা বাস্তিয়ান সোয়েইনস্টেইগারকে উদ্দেশ্য করে ম্যারাডোনা বলেছিলেন, ‘সোয়েইনস্টেইগার, আর ইউ নার্ভাস?’ মাঠে নেমে আর্জেন্টিনাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দেন টমাস মুলাররা।
চার বছর পরের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ঘরের মাঠে জার্মানি ৭-১ গোলে চূর্ণবিচূর্ণ করে সেলেসাওদের। দুঃস্বপ্নের সেই রাত আজও ভোলেননি ব্রাজিলীয়রা। শুক্রবার রাতে বায়ার্ন মেসিদের ভেঙেচুরে শেষ করে দেয়। ৩১ মিনিটের মধ্যেই ৪-১! তখনই ম্যাচ পকেটে নিয়ে ফেলেছিল বায়ার্ন। নব্বই মিনিটের শেষে সেটাই হয়ে ৮-২। হাবাস বলছেন, ‘জার্মানদের অভিধানে রিল্যাক্স বলে কোনও শব্দ নেই। বার্সেলোনাকে দেখে কেমন যেন ছাড়া ছাড়া মনে হয়েছে।’
শুক্রবারের ম্যাচ নিয়ে অনেকেই বলেছেন, বার্সার মাঝমাঠ বলে কিছু নেই। জাভি-ইনিয়েস্তারা বুট জোড়া তুলে রেখেছেন। পাসিং ফুটবলকে অন্য মাত্রা দিয়েছিলেন মাঝমাঠের দুই নেতা। জাভি-ইনিয়েস্তা প্রসঙ্গে শোনা যায়, অনুশীলনে দুজন যখন নিজেদের মধ্যে বল পাস করার অনুশীলন করতেন, সেই শব্দ শুনে তাঁদের কোচ বুঝে যেতেন দুই শিল্পী সাধনায় মেতে উঠেছেন। মাঠে নেমে ফুল ফোটাতেন জাভি-ইনিয়েস্তা। তাঁদের পাশে পেয়ে মেসি হয়ে উঠতেন আরও ভয়ঙ্কর। ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যেতেন ‘এলএম টেন’। বার্সার সেই সোনায় মোড়ানো মাঝমাঠ কোথায়?
সেই মেসি শুক্রবার রাতে মাঠে ছিলেন কিনা, সেটাই ভালো করে বোঝা যায়নি বায়ার্নের দাপটে। স্প্যানিশ ফুটবলার টনি ডোভালে বলছেন, ‘মেসি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহই নেই। যেকোনো মুহূর্তে ও ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে। তবে ওকে সাপোর্ট দেওয়ার মতো ফুটবলারও তো দরকার। বার্সেলোনায় যে সাপোর্ট আগে পেত মেসি, সেটা এখন আর পাচ্ছে না। জাভি-ইনিয়েস্তার বিকল্প পাওয়া বার্সার পক্ষে কঠিন।’