উচ্চ আদালতের নির্দেশে লাক্কাতুরা স্কুল মাঠ থেকে পশুর হাট উচ্ছেদ

19
উচ্চ আদালতের নির্দেশের পর লাক্কাতুরা স্কুল মাঠ থেকে পশুর হাট উচ্ছেদ করছে পুলিশ।

স্টাফ রিপোর্টার :
উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পর লাক্কাতুরা এলাকার সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বসানো অস্থায়ী পশুর হাট বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট সদর উপজেলা প্রশাসন হাটটি বন্ধ করে দিয়ে হাটে আনা সকল গরু-ছাগল মাঠ থেকে বের করে দেয়া হয়।
সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিরাজুম মুনিরা বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) সমন্ত ব্যানার্জি পুলিশের সহযোগিতায় স্কুল মাঠের হাটটি বন্ধ করে দেন। এসময় মাঠের সকল পশুও সরিয়ে দেওয়া হয়।
সদর উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ঈদ উপলক্ষে স্কুল মাঠে এই অস্থায়ী পশুর হাট বসানো হয়েছিলো। তবে স্কুলের মাঠ বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার, আশপাশের স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি ও পাশ্ববর্তী চা বাগানে করোনা সংক্রমণের শঙ্কা থাকায় এই মাঠ থেকে হাট সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন অনেকে। এই স্কুল মাঠে হাট বসানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভও করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলণ (বাপা)
গত বুধবার ভার্চুয়াল আদালতে এই হাট স্থাপনের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারক তারিকুল হাকিম স্কুল মাঠে পশুর হাট বন্ধের আদেশ দেন। স্কুল মাঠে হাটের জন্য বসানো সকল স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ারও নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতের নির্দেশনা প্রসঙ্গে আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী বলেছিলেন, মহামারীর এই পরিস্থিতিতে হটস্পট তৈরি হয়ে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় এই রিট করেছি। এছাড়া বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ বাণিজ্যিক কোনো কাজে ব্যবহার না করার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও নির্দেশনা রয়েছে। তিনি বলেন, আবেদন আমলে নিয়ে আদালত হাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত হাটের ইজারা প্রদানের নোটিশ স্থগিত করেছেন।
উল্লেখ্য, সদর উপজেলার বাসিন্দা চান মিয়ার পুত্র কাদির আহমদ বাদী হয়ে লাক্কাতুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে পশুর হাট সরিয়ে নিতে হাইকোর্টে একটি রিটি পিটিশন দায়ের করলে গত বুধবার ২৯ জুলাই হাট সরানোর আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি তারিক উল হাকিম।
এই মাঠের পাশেই সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও লাক্কাতুরা চা-বাগান। কোরবানি পশুর হাট বসলে এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা ছিল। এদিকে নগরীর এমসি কলেজ মাঠ ও আলিয়া মাদ্রাসা মাঠেও কোরবানির পশুর হাট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছিলো সিটি করপোরেশন। কিন্তু শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের আপত্তিতে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সিসিক। কিন্তু আপত্তি সত্ত্বেও লাক্কাতুরার স্কুল মাঠে চলছিল হাট বসানোর প্রস্তুতি। গতকাল আদালতের স্থগিতাদেশে সেখানে আর কোনো পশুর হাট বসছে না।